ডাক্তারি করা ছেড়েছেন বছর ১৪ আগে। এতদিন সিনেমা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান (Cyclone Amphan), করেনার কারণে রাজ্যের বড় অংশের মানুষের জীবন সমস্যায়। তাই মন কাঁদছে মেঘে ঢাকা তারার পরিচালকের। তিনি খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (kamaleswar Mukherjee)। ১৪ বছর পর তিনি হাতে তুলে নিয়েছেন স্টেথোস্কোপ। আম্ফান বিধ্বস্ত সুন্দরবন অঞ্চলে গিয়ে ক্যাম্প করে রোগী দেখেছেন। ২০০৬ সালে সিনেমা আর নাটকের প্রতি অসীম টান থেকেই ছেড়ে এসেছিলেন নিজের ডাক্তারি পেশা। মেঘে ঢাকা তারা, মুখোমুখি, পাসওয়ার্ড, চাঁদের পাহাড় সহ একাধিক সিনেমা উপহার দিয়েছেন বাঙালি দর্শককে। তবে শুধু পরিচালনা নয়, অভিনয়ও করেছেন একাধিক সিনেমায়। কিন্তু বাংলার এমন দুর্যোগের দিনে তিনি থেমে থাকলেন না। আম্ফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনে ছুটে গেলেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর'স ফোরাম (West Bengal Doctor's Forum), শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, আস্থা, ড: ভাস্কর রাও জনস্বাস্থ্য কমিটি, অগ্নিভ ফাউন্ডেশন, স্বাস্থ্য শিক্ষা নির্মাণ ও রাসবিহারী শৈলুষিকের মিলিত উদ্যোগে বিনামূল্যের চিকিৎসা শিবির আয়োজন করা হয়েছিল সুন্দরবনের একাধিক অঞ্চলে। সেখানে প্রায় দুশোরও বেশি মানুষের চিকৎসার ব্যবস্থা এবং বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। এই শিবিরেই অংশ নিয়েছিলেন মেডিকেল কলেজের প্রাক্তনী কমলেশ্বরবাবু। আরও পড়ুন: Monali Thakur: ৩ বছর আগে চুপিচুপি বিয়ে করেছেন সংগীত শিল্পী মোনালি ঠাকুর!
চাঁদের পাহাড়ের পরিচালক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, অন্তত ৩৫টি শিবির করেছেন তাঁরা। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, "সংখ্যাটা বড়ো কথা নয় - এই উদ্যোগ, এই দর্শন, এই স্বতঃস্ফূর্ত সামাজিকতা - এই মানবতাই শেষ কথা। এই বিপর্যয়ে প্রান্তিক মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কত মানুষ ! দেখে রক্ত টগবগ করে ফুটছে - কত ছাত্র, ছাত্রী, যুবক, যুবতী, বর্ষীয়ান অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের দিকে। বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ছাত্র-যুব সংগঠন, সংস্কৃতিক কর্মীরা, গণমাধ্যমের যোদ্ধারা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকারকে সজীব রাখতে ছুটেছেন পাড়ায় পাড়ায় - গ্রামে গঞ্জে - অকৃপণ আর্থিক সাহায্য করেছেন । নিজের চোখে দেখেছি রাজ্য জুড়ে চতুর্দিকে তাঁরা তৈরী করে ফেলেছেন সামাজিক রান্নাঘর (community kitchen) । কেউ এগিয়ে এসেছেন কলেজ স্ট্রিট বই পাড়ার মানুষের বা কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের সাহায্যে - কেউ সহনাগরিক হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন নাটক কিংবা টেলিভশন ধারাবাহিক বা চলচ্চিত্রের কর্মীদের। কেউ নিজেদের আঁকা ছবি বা তোলা ফটোগ্রাফ বিক্রি করে অর্থসাহায্য করেছেন। প্রশ্নটা নিজের চেষ্টায় কে কতটুকু করতে পেরেছেন - তা নয়; কথা হলো আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতার পরাজয় ঘটছে - সামাজিক সমন্বয়ের বিকাশ হচ্ছে। ইতিহাস এই অধ্যায় ভুলবে না।"