ওয়াশিংটন ডিসি, ২৪ জুলাই: আমেরিকা সফরে নিজেকে সন্ত্রাস দমনে পরাকাষ্ঠা হিসবে প্রতিপন্ন করতে সদাই ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগে বলেছিলেন লাদেনের গোপন ডেরার খবর দিয়েছে আইএসআই। এবার বললেন, পাকিস্তানে ৩০ থেকে ৪০ হাজার জঙ্গি রয়েছে। ৪০টি জঙ্গি সংগঠন পাকিস্তানের মাটিতে থেকে নাশকতা চালাচ্ছে। তবে পাকিস্তানে জঙ্গি থাকলেও পাকিস্তান তাদের প্রশিক্ষণ দেয় না। এটা বলতে ছাড়লেন না ইমরান। তাঁর দাবি, এই ৩০-৪০ হাজার জঙ্গি কাশ্মীর ও আফগানিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আজকের পাকিস্তান যে জায়গায় দাঁড়িয়ে তার দায় পূর্বতন সরকারগুলির ঘাড়েই চাপিয়েছেন ইমরান (Imran Khan)। আরও পড়ুন-আমেরিকার হাতে লাদেনকে তুলে দিয়েছিল আইএসআই, কী বললেন ইমরান খান?
এ প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনও রকম আগ্রহই দেখায়নি আগের সরকার। এ ব্যাপারে তাদের কোনও রাজনৈতিক সদিচ্ছাও ছিল না।” পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, আগের সরকার যে কাজ করেছে, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না তাঁর সরকার। সন্ত্রাস দমনে তাঁর সরকার অনেক বেশি উদ্যোগী বলেও দাবি করেন ইমরান। এর আগে ইমরান বলেছিলেন, ১৫ বছর ধরে পাকিস্তানে সক্রিয় ছিল ৪০টি জঙ্গি সংগঠন। কিন্তু এই তথ্য বার বারই আমেরিকার কাছে গোপন করেছে পূর্ববর্তী সরকারগুলো। এর পরই তাঁর সাফাই, পাকিস্তানেরও সে সেময় কিছু করার ছিল না। কেননা গোটা পরিস্থিতি পাক সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।
ইমরান বলেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিল তাতে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান। তবে ৯/১১-র ঘটনায় পাকিস্তানের কোনও যোগ ছিল না।” এর পরই তাঁর মন্তব্য, সে সময় পাকিস্তানই দেশের ভিতরের সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু তার পরেও আমেরিকার সঙ্গে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে তারা। পূর্বসূরিরা যে ভুল করে গিয়েছেন, সে ভুল আর করতে চান বলেও ইঙ্গিত দেন ইমরান। তাঁর দাবি, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ দমনে জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে। তালিবানদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে তারা। ভাল সাড়াও মিলেছে। তবে বিষয়টা খুব সহজেই মিটবে বলে মনে করছেন না ইমরান। শান্তি ফিরিয়ে আনতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করবেন। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে কী ভাবে তাঁরা এগোচ্ছেন গোটা প্রক্রিয়াটাই আমেরিকাকে জানাবে পাকিস্তান, এমনটাই দাবি ইমরানের।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে সন্ত্রাস প্রশ্নে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। সেই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতেই ইমরানের এহেন ভোলবদল।