লন্ডন, ২৬জুন: নিজাম (Nizam), হ্যাঁ হায়দরবাদের নিজামদের (Hyderabad Nizam)কথাই বলছি। গোটা ভারত ব্রিটিশের উপনিবেশে পরিণত হলেও নিজামরা কিন্তু স্বাধীনই ছিল। আর এই স্বাধীনতা উপভোগের বিনিময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে হীরে জহরতে মুড়িয়ে রেখেছিলেন তৎকালীন নিজাম। এবার সেই নিজামের সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে আইনি লড়াইতে নামল ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan)। এমনিতেই কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এই দুই দেশের মধ্যে অশান্তি শত্রুতার আগুন কখনওই নেভে না। তারসঙ্গে উপরি পাওনা হিসেবে যোগ হলেন হায়দরাবাদের নিজামরা। নিজামদের উত্তরপুরুষই পূর্ব পুরুষের গচ্ছিত অর্থ ভোগ করুন এমনটাই চাইছে ভারত, তবে পাকিস্তান মানতে নারাজ। আরও পড়ুন-Pakistan: রাউলপিন্ডির সরকারি হাসপাতালে বিস্ফোরণে আহত জঙ্গি নেতা মাসুদ হাজহার, সোশ্যাল মিডিয়ার খবর ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
জানা গিয়েছে, সপ্তম নিজাম ভারত স্বাধীন হওয়ার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। সেইসময় পাকিস্তানের এক দূতের সাহায্যে ইংল্যান্জে ব্যাংকে ১০ লক্ষ পাউন্ড জমা করান তিনি। এরপর একদিন হায়দরবাদও ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই টাকাকালক্রমে বেড়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া এই অর্থই ব্রিটেনের সরকারের কাছে দাবি করেন অষ্টম নিজাম ও তাঁর ভাই। যেহেতু হায়দরাবাদ ভারতের অংশ তাই প্রথমেই বিষয়টি নয়াদিল্লিকে জানায় লন্ডন। ইতিমধ্যেই খবর পেয়ে এঁটুলির মতো এঁটে বসেছে ইসলামাবাদ। অষ্টম নিজামের ইচ্ছেতে বাগড়া দিতে কোনও কসুর করছে না। সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সপ্তম নিজামের গচ্ছিত অর্থ পাবে পাকিস্তানের জনসাধারণ। কেননা তাদের উন্নতিতেই ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন তিনি। এর আগে পাকিস্তানের তরফে সপ্তম নিজামের টাকা সংগ্রহ করার চেষ্টাও হয়েছে। ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারকেই এই অর্থ আদায়ের পরামর্শ দিয়েছিল ইসলামাবাদ। এদিকে এখন সেই অর্থ পেতে ব্রিটিশদের দ্বারস্থ অষ্টম নিজাম ও তাঁর ভাই। তাঁর এখন তুরস্কে থাকেন। ব্রিটিশদের টাকা দিতে আপত্তি নেই ভারতও বাদ সাধেনি, মাঝখান থেকে পাকিস্তান ভুঁইফোরের মতো অর্থের মালিকানা দাবি করছে।
উল্লেখ্য, এই অর্থ নিয়ে আইনি লড়াই এই প্রথম নয়। পঞ্চাশের দশকে নিজামেরা ওই অর্থ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে তুলে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাক সরকার তখনই জানিয়েছিল, পাকিস্তানের মুসলিম সম্প্রদায়কে ওই অর্থ উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন সপ্তম নিজাম। ফলে ওই অর্থ নিজামের বংশধরেরা কখনওই দাবি করতে পারেন না। ইসলামাবাদের সেই দাবি তখন মেনে নেন হাউস অব লর্ডসের লর্ড ডেনিং। তিনিও রায় দেন যে, ওই অর্থ লন্ডনেই থাকবে। বলা বাহু্ল্য, আগামী মাসের মধ্যেই এই মামলার নিষ্পত্তি হতে চলেছে।