মশার কামড়ে ডেঙ্গু (Dengue), ম্যালেরিয়ার মত প্রাণঘাতী রোগের জেরে এমনিতেই জেরবার প্রতিটা মানুষ। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে জুটেছে 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' (West Nile Virus)। সদ্য কেরলে (Kerala) ১০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর মিলেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, কেরলের কোঝিকোড় (Kozhikode) এবং মালাপ্পুরম জেলায় সাম্প্রতিক সময়ে ১০ জনের শরীরে 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' মিলেছে। আরও জানানো হয়েছে, ডব্লিউএনভি আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে ৯ জন সুস্থ হয়েছেন। ১ জন কোঝিকোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অন্যদিকে এক বেসরকারি তথ্য অনুসারে, সম্প্রতি 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস'এ (West Nile Virus) ২ জনের প্রাণ কেড়েছে। সরকারি তরফে এই তথ্যে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। মৃতদের নমুনা পরীক্ষার জন্যে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরেই জানা যাবে, ডব্লিউএনভি-র সংক্রমণের জেরে ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে কিনা।
'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' কী, সেই সম্পর্কে অনেকেরই এখনও স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' আসলে কী? কীভাবে ছড়ায়? এর উপসর্গ কী?
'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' কীঃ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) জানাচ্ছে, West Nile Virus 'কিউলেক্স' প্রজাতির মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এই ভাইরাস ব্যক্তির স্নায়ুতে আঘাত করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমিতের শরীরে কোন লক্ষণ বোঝা যায় না। হু-আরও (WHO) বলছে, এই রোগের প্রাকৃতিক বাহক হল পাখি। মশা এবং পাখি এই দুই বাহকের মাধ্যমে 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস' মানুষ, ঘোড়া এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে ছড়ায়। তবে মানুষের থেকে মানুষের শরীরে এই ভাইরাস ছড়ায় কিনা সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
এই রোগের উপসর্গ কীঃ
কেরলে ১০ জন ওয়েস্ট নীল ভাইরাস আক্রান্তের মধ্যে ৮ জনের কোনরকম উপসর্গই ছিল না। তাঁরা নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে জ্বর, মাথাব্যাথা, বমি বমি ভাব, ফুসকুড়ি, ডায়রিয়ার মত কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে এনসেফালাইটিস বা মেনিনজাইটিসের মতো গুরুতর স্নায়ুরোগ গুলি দেখা দিতে পারে। যার জেরে মৃত্যুর পর্যন্ত হতে পারে।
রোগের চিকিৎসাঃ
এখনও অবধি 'ওয়েস্ট নীল ভাইরাস'এর প্রতিষেধক হিসাবে কোন টিকা তৈরি হয়নি। গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যেমন শিরায় ফ্লুয়িড, ব্যাথার ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে রোগীদের।