ঘূর্ণিঝড়/ প্রতীকী ছবি (Photo Credits: Wikimedia Commons)

করোনা সামলাতে এমনিতেই টালমাটাল অবস্থা গোটা দেশের। তার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) ত্রাস। পূর্বাভাস মিলল এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের একেবারে শুরুতেই বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) জন্ম নেবে ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। ঘূর্ণিঝড় কতটা শক্তিশালী হবে, শেষমেশ কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও জানানো হয়নি।

আবহবিদরা জানিয়েছেন, মে-র প্রথমেই আন্দামান সাগর লাগোয়া দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ের খবর অনুযায়ী মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, ‘বর্ষার আগে এবং বর্ষার পরে দু’দফায় ঘূর্ণিঝড়ের মরসুম। এই সময় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সহায়ক পরিবেশ থাকে। ধীরে ধীরে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দিন সাতেক পর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে। প্রাথমিক ভাবে প্রভাব পড়বে আন্দামান-নিকোবরের দ্বীপগুলিতে। এর পর অভিমুখ কী হবে, তা আরও একটু সময় না-গেলে স্পষ্ট হবে না।’ আরও পড়ুন, শুক্রবার দেশে মোট করোনা আক্রান্ত ২৩ হাজার ৭৭, গত ২৪ ঘণ্টায় মারণ রোগের কবলে ১৬৮৪ জন

মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘২৭ এপ্রিলের পর আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত উদয় হবে। সেটি শক্তি বাড়াতে পারে। এই মুহূর্তে দেশের মূল ভূখণ্ডের জন্য কোনও সতর্কতা নেই।’ মায়ানমারের আবহাওয়া দপ্তরও এপ্রিলের শেষে নিম্নচাপ সৃষ্টির আভাস দিয়ে রেখেছে। এপ্রিলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের ভারতের মূল ভূখণ্ডের দিকে এগিয়ে আসার প্রবণতা কম। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এপ্রিলে সৃষ্ট কোনও ঘূর্ণিঝড়ই বাংলায় আসেনি। পূর্ব উপকূলে হাজির হয়েছে মাত্র চারটি ঘূর্ণিঝড়। বাকি ২৪টির গন্তব্য হয়েছে বাংলাদেশ বা মায়ানমার। মে মাসে বাংলায় আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা সাত। যার মধ্যে একটি ২০০৯ সালের আয়লা। ওডিশা-অন্ধ্রের দিকে গেছে ১৩টি ঘূর্ণিঝড়। বাংলাদেশ, মায়ানমার মিলিয়ে সংখ্যাটা অনেক বেশি, প্রায় ৪০।

গত ৩ মে পুরীতে আছড়ে পড়ে এপ্রিলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণী। যার জন্য ওডিশার পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছিল বাংলাও। নভেম্বরে সুন্দরবনে আছড়ে পড়া বুলবুলও ছিল। সাধারণত, বছরের ওই সময়ের ঘূর্ণিঝড়গুলি ওডিশা বা অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে এগোয়। বুলবুলের আগে ১৩০ বছরে বাংলার পথ ধরেছিল মাত্র চারটি ঘূর্ণিঝড়। আবহবিদরা মনে করছেন, ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পূর্ব অভিমুখে এগিয়ে মায়ানমারে ঢুকে গেলে এ যাত্রায় বিপদের হাত থেকে বেঁচে যাবে ভারত। তবে চিত্রটা এপ্রিলের শেষে স্পষ্ট হয়ে যাবে, বলছেন আবহবিদরা। ঘূর্ণিঝড়ের নাম কী হবে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিলেই নাম দেওয়া হবে ‘উম্পুন’। নামকরণ করেছে থাইল্যান্ড।