বিহার, ১৪জুন: লিচুর মধ্যে থাকা অতিরিক্ত টক্সিনই বিহারে একের পর এক শিশু মৃত্যুর কারণ। এই লিচু খেলেই রক্তে শর্করার পরিমাণ হু হু করে নেমে (low blood sugar) যাচ্ছে যার কারণে ব্রেন ডেথ হয়ে মৃত্যু হচ্ছে রোগীর। মূলত শিশুরাই এই রোগের শিকার হচ্ছে। বিহারে ইতিমধ্যেই ৪৭জন শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সরকারি ভাবে এই রোগটিকে ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হচ্ছে। বিহারের স্বাস্থ্য দপ্তরের এহেন তথ্যকে কিন্তু গুরুত্ব দিতে নারাজ অনেকেই। বেসরকারি সূত্র বলছে, এনসেফেলাইটিসের প্রকোপ (encephalitis syndrome) শুরু হয়েছে বিহারে। তার জেরেই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আরও পড়ুন- NRS-কাণ্ডে চিকিৎসকদের পাশে খোদ মমতা ব্যানার্জির ভাইপো আবেশ, মেয়র ফিরহাদের মেয়ের দলকে তোপ
বিহারে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ যার মধ্যে ৭০ শতাংশই কিশোর বা কিশোরী। শিশুও রয়েছে। বলা হচ্ছে, এনসেফেলাইটিসের প্রভাবেই মৃত্যু হয়েছে এই শিশুদের। মুজফ্ফরপুর জেলা (Muzaffarpur) প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম (এইএস) সন্দেহে মোট ১৭৯ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। ২০১৩ সালে উত্তরপ্রদেশে এনসেফেলাইটিসের হানায় মৃত্যু হয়েছিল ৩৫১ জনের।
বিহার স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা সঞ্জয় কুমারের (Sanjay Kumar) দাবি, “চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। হাসপাতালগুলিতে ভর্তি করা হয়েছে অসংখ্য শিশু ও মহিলাকে।”স্বাস্থ্য দপ্তর যদিও এনসেফেলাইটিসের তত্ত্ব মানতে রাজি নয়। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, বিহারের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে গরমের সময় যথেচ্ছ ভাবে লিচু খায় বাচ্চারা। এই লিচু থেকে নির্গত টক্সিনই (toxins in lychees) রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার ঘটনাকে বলা হয়, ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’। রক্তে সোডিয়াম বা পটাসিয়ামের মতো ধাতব মৌলের পরিমাণ কমে গেলেও হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হন রোগী। এই টস্কিন শিশুদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে, যার পরিণতি মৃত্যু। তবে গরম কমলে এই রোগের প্রকোপও নিজে থেকেই কমে যায়। তখন লিচুর মধ্যে আর ক্ষতিকারক টক্সিন তৈরি হয় না।
তবে স্বাস্থ্য দপ্তরের ব্রেন ফিভারের তত্ত্বের সঙ্গে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিসের জোর খটাখটি লেগেছে। শুধু বিহার-ই নয় উত্তরপ্রদেশেও এনিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে।