মহলয়া দেবীপক্ষের সূচনা, গঙ্গায় চলছে পিতৃ তর্পণ([Photo Credits Twitter and ANI)

কলকাতা, ১৭ সেপ্টেম্বর: 'বাজলো, বাজলো তোমার আলোর বেণু'। আজ মহালয়া, পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনায় গঙ্গার ঘাটে ঘটে চলেছে পিতৃ পুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বাঙালির আবেগ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহালয়া শোনা যেন দুর্গাপুজোর সূচনার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। ভোর চারটেতেই রেডিওর সামনে বসে পড়েছেন অনেকে। কেউ টিভিতে মহালয়া দেখছেন। “আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জির। ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা...” আসলে বাঙালি যতই অত্যাধুনিকতাকে বরণ করে নিক না কেন, দুর্গাপুজো কিন্তু সাবেকিয়ানাতেই থেকে গিয়েছে। পোশাক পরিচ্ছদ, চলনে বলনে যতই পরিবর্তন আসুক না কেন মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত গলায় দেবীর আগমন বার্তা না শুনলে যেন পুজোই শুরু হয় না।

মহালয়া উপলক্ষে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে প্রচুর মানুষের ঢল। কলকাতা, নবদ্বীপ, নৈহাটি, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া। সবাই তর্পণ করছেন। তবে এবছরের তর্পণও একটু অন্যরকম, কারণ মহামারী করোনাভাইরাস। পুজো মানেই মানুষের মহামিলন, এবার ভাইরাসের ভীতি, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বেড়া। জানি না কতটা অসামাজিক হতে পারেল আমরা সবাই করোনাকে রুখতে পারব। তবে দেবীপক্ষের সূচনায় সকলেই চাইছি মহামারী এবার বিদায় নিক। অনেক তো হল, লকডাউন, ছাটাই, একের পর এঅক ভিন্ন দুঃকের পরত সামলে তবুও উৎসব মুখর বাঙালি। বছরে তো পরিবার সমতে মা দুর্গা একবারই মর্ত্যে আসেন। মায়ের আবাহনেও যদি ভাইরাসের আতঙ্কে ঘরে বসে থাকতে হয়, তাহলে দুঃখের সীমা থাকে না। আরও পড়ুন-Delhi Riots Case: দিল্লি হিংসা মামলায় ১৫ জন অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ দিল্লি পুলিশের

মহালয়া উপলক্ষে গঙ্গায় চলেছে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্য তর্পণ

পুরাণ মতে, এ দিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। মহালয়া মানেই আর ৬ দিন পরেই শুরু দুর্গাপুজো। হিসাব মতে মহালয়া থেকে দুর্গাপূজার আগমনী ধ্বনি শুনতে পাওয়া গেলেও এবার আর ৬ দিন পরে পুজো নয়। আশ্বিন মাস মল মাস হওয়ার কারণে এবার দুর্গাপুজো শুরু হবে প্রায় একমাস পর আগামী ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে। শ্রী শ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। শারদীয় দুর্গাপুজোর একটি গুরুত্বপর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া। এই বছরের পুজো অন্যান্য বছরের মতো নয়। মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনও মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। দেবীপক্ষের এই পুণ্যলগ্নে একটাই আকঙ্খা, উমা মায়ের হাতে করোনাসুর বধ হোক, পৃথিবী আলোয় ফিরুক।