জৌনপুর, ৩ নভেম্বর: পরনে লাল বেনরাসী শাড়ি (Sharee)। মাথায় অনেকখানি টানা ঘোমটা। নাকে বড় নাকছাবি, কানে ঝুমকো, হাতে ঝলমল করছে চুড়ি। ঠিক যেন নববধূ (Bride)। কিন্তু ঘোমটা সরালেই পাল্টে যাবে সব হিসেব। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে (Uttar Pradesh Jounpur) গেলে আপনি এমন একজনের দেখা পেতে পারেন, যার সাজ-পোশাক আদ্যোপান্ত মহিলাদের মত বলা বাহুল্য নববধূর মত হলেও আসলে তিনি একজন পুরুষ। বয়স ৬৬। নাম চিন্তাহরণ চৌহান (Chintaharan Chouhan)। পরিবারের চিন্তা হরণ করতেই রোজ এমনভাবে রঙ চড়াতে হয় এই প্রৌঢ়কে।
পেটের ভাত জোগাড় করতে অনেক পুরুষই মহিলা সেজে (Man Dressing Up As Women) রোজগার করার পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। কিন্তু চিন্তা হরণের চিন্তা অন্য। ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিদিন মহিলাদের পোশাকে সেজে ওঠেন চিন্তাহরণ। চিন্তাহরণের কথায়, সাত এবং আটের দশকে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে নিজের পরিবারের ১৪ জনকে হারিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে নববধূর মতো পোশাক পরে আসছেন। এই পোশাক পরার পর থেকেই নাকি তাঁর বাড়িতে আর অকালমৃত্যু হয়নি। তিনি আরও বলেন, “একে একে যখন সবাই চলে যাচ্ছে, তখন আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বপ্নাদেশ পাই। সে আমাকে বলেছিল এভাবে নববধূর বেশে থাকতে। তাহলেই পরিবারের আর কারও ক্ষতি হবে না।” তারপর থেকেই আমি রোজ নতুন বউ সেজে আসছি ৩০ বছর ধরে। আরও পড়ুন: Pallab Lochan Das: ভালো রাস্তা হলেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটে, দাবি করলেন অসমের বিজেপি সাংসদ পল্লব লোচন দাস
চিন্তাহরণ জানান, ১৪ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে (Marriage) হয় তাঁর। তার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর প্রথম স্ত্রী (Wife) মারা যান। ২১ বছর বয়সে তিনি কাজ করতে বাংলায় (West Bengal) আসেন। উত্তর দিনাজপুরের একটি ইটভাটায় কাজ করতেন তিনি। কাজ করতে করতে মালিকের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। কিছুদিন বাদে মালিকের মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু, চিন্তাহরণের পরিবার তা মেনে নেয়নি। শেষে স্ত্রীকে ছেড়ে উত্তরপ্রদেশ ফিরে যান তিনি। কিছুদিন বাদেই তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী আত্মহত্যা (Suiside) করেন। পরিবারের চাপে কয়েক মাস বাদে আবার বিয়ে করতে হয় চিন্তাহরণকে। এবারে তিনি নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিন্তাহরণ প্রাণে বেঁচে গেলেও একে একে তাঁর বাবা-মা-ভাই-ভাইয়ের ছেলেমেয়ে মিলিয়ে পরিবারের ১৪ জন প্রাণ হারান। যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল তাঁকে।