অপেক্ষার প্রহর গোনা শেষ। আজ সোমবার, ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা (Maha Kumbh 2025)। প্রতি ১২ বছর অন্তর একবার পূর্ণকুম্ভ আয়োজিত হয়। আর ১২টি পূর্ণকুম্ভের পর আয়োজিত হয় মহাকুম্ভ। অর্থাৎ ১৪৪ বছরে একবার মহাকুম্ভের আসর বসে। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫। হিন্দু ধর্মের ইতিহাসে কুম্ভ মেলার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করলে পাপ ধুয়ে যায় এবং ভক্তদের ঐশ্বরিক আশীর্বাদ লাভ হয়।
নাগা সাধুরা সঙ্গমে প্রথম পবিত্র স্নান করেন। তারপরে স্নান করেন সাধারণ পুণ্যার্থিরা। কথিত আছে, কুম্ভস্নানে কেবল বর্তমান জীবনের পাপই নয়, অতীত জীবনের পাপও ধুয়ে দেয়। এছাড়া শাহী স্নান বা পবিত্র স্নানের মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তিলাভ হয়।
এই মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু রহস্যকথা। কুম্ভমেলার উৎপত্তি সম্পর্কে কী বলা রয়েছে শাস্ত্রে? জানুন...
কুম্ভমেলার ইতিহাসঃ
সমুদ্র মন্থনের সময়ে যে অমৃত কলস উঠে এসেছিল, সেই অমৃতের অধিকার নিয়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে সংঘাত বাধে। অসুররা যখন অমৃত কলস দখল করে তখন স্বয়ং বিষ্ণু মোহিনী রূপ ধরে অসুরদের ভুলিয়ে কলস ফিরিয়ে আনেন দেবতাদের কাছে। অমৃতের অধিকার নিয়ে সংঘাত ক্রমে তীব্র হলে দেবরাজ ইন্দ্রের ছেলে জয়ন্তর হাতে কলস তুলে দেন বিষ্ণু। জয়ন্ত কাকের বেশ ধরে কলস ঠোঁটে নিয়ে উড়ে যান। সেই সময় কয়েক ফোঁটা অমৃত চার জায়গায় পড়েছিল। এই চারটি স্থান হল - প্রয়াগরাজ, উজ্জয়ীনি, হরিদ্বার ও নাসিক। আর ওই চার স্থানেই কুম্ভমেলা আয়োজিত হয়।
১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজে (Prayagraj) আয়োজিত মহাকুম্ভের বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। এখানেই রয়েছে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী তিন নদীর ত্রিবেণী সঙ্গম। মনে করা হয়, মহাকুম্ভের শাহী স্নানের শুভক্ষণে প্রয়াগের ত্রিবেণী সঙ্গমে যারা স্নান করবেন তাঁরা মুক্তিলাভ করবেন।
মহাকুম্ভে শাহী স্নানের দিনক্ষণঃ
১৪ জানুয়ারি, ২০২৫: মকর সংক্রান্তির দিন, মহাকুম্ভের প্রথম শাহী স্নান।
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫: মৌনী অমাবস্যার দিন, দ্বিতীয় শাহী স্নান।
৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫: বসন্ত পঞ্চমীর দিন, তৃতীয় শাহী স্নান।
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫: মাঘী পূর্ণিমার দিন, চতুর্থ শাহী স্নান।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫: মহাশিবরাত্রিতে মহাকুম্ভের শেষ শাহী স্নান।