জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) এর বিশ্ব জনসংখ্যা রিপোর্ট ২০২২ অনুসারে, ভারতে প্রতিদিন গর্ভপাতের কারণে মৃত্যু হয় প্রায় ৮ জন মহিলার, ৬৭ শতাংশ গর্ভপাত বিপজ্জনক। গর্ভপাত সংক্রান্ত মেডিকেল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট রয়েছে ভারতে। এই অ্যাক্টের মাধ্যমে জানা যায় একজন নারীর গর্ভপাতের জন্য কার কার অনুমতি প্রয়োজন এবং গর্ভপাত কখন করা যায় ও কখন করা আইন বিরুদ্ধ। গর্ভাবস্থার কারণে গর্ভবতীর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকলে, শিশুটি প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, মহিলা মানসিক বা শারীরিকভাবে সক্ষম না হলে, কোনও নাবালিকা মেয়ে গর্ভবতী হলে, ধর্ষণের কারণে কোনও নারী গর্ভবতী হলে আইনত গর্ভপাত করা সম্ভব।
২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, সুপ্রিম কোর্ট তার বিবৃতিতে বলেছিল যে একজন মহিলার শরীরের উপর কেবল তারই অধিকার রয়েছে, তাই গর্ভপাত করতে চান কি না তার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন শুধুমাত্র সেই গর্ভবতী মহিলা। অনুচ্ছেদ ২১ অনুযায়ী একজন মহিলাকে গর্ভপাত করার অনুমতি তখন দেওয়া হয় যখন গর্ভাবস্থার কারণে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে ওই মহিলার। মেডিকেল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে, ২২ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করার অধিকার রয়েছে প্রতিটি মহিলার। সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে চিকিৎসকের কাছে গর্ভপাতের জন্য আসা কোনও মহিলার উপর জোরপূর্বক শর্ত আরোপ করা যাবে না, তাদের কেবল এমটিপি আইনের শর্তগুলি পূরণ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
সাধারণত গর্ভপাতের জন্য আসা একজন মহিলাকে তার পরিবার বা স্বামীর অনুমতির কোনও প্রয়োজন নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বামী বা পরিবারের অনুমতি প্রয়োজন হয়। নাবালিকা মেয়ে বা মানসিকভাবে অক্ষম মহিলা গর্ভবতী হলে গর্ভপাতের জন্য পিতামাতার সম্মতি প্রয়োজন। একজন বিবাহিত মহিলা তার স্বামীর দ্বারা সহবাসে বাধ্য করা না হলে গর্ভপাতের জন্য স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের সম্মতি থাকা জরুরি। তবে ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুসারে, স্বামী যদি স্ত্রীর সঙ্গে জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার কারণে স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে যায়, তাহলে গর্ভপাতের জন্য মহিলার কারও অনুমতি বা সম্মতির প্রয়োজন নেই।