অপমান করলেন তথাগত রায়, “বাঙালির ছেলেরা ঝাঁট দেয় মেয়েরা বারে নাচে, তাহলে কেন হিন্দি শিখবে না?”
তথাগত রায়(Photo Credit: IANS)

মেঘালয়, ৬জুন:  বাঙালির ছেলেরা তো হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত ঘর ঝাঁট দিয়ে বেড়ায়, আর বাঙালি মেয়েরা মুম্বইয়ে বারে নাচে। তাহলে বাঙালি কেন হিন্দি শিখবে না।’ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতা মূলক প্রশ্নে এভাবেই বাঙালিকে ঠুকতে গিয়ে নয়া বিতর্কে জড়ালেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় (Tathagata Roy)। কট্টর বিজেপি সমর্থক তথাগতবাবু কেন্দ্রকে সমর্থন করতে গিয়ে বাঙালি জাতিকেই অপমান করে বসলেন। তাঁর এই টুইটবার্তাকে ঘিরে নেটদুনিয়ায় উঠেছে সমালোচনার ঝড়। আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করেই বিজেপিকে হুঁশিয়ার করলেন, কড়ায় গন্ডায় অপমানের হিসেব বুঝে নেবেন

নিজের টুইটার পেজে তথাগত লিখেছেন, “তামিল নাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে। অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ছাড়া ইংরিজি কেউ বুঝবে না। যাঁরা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তাঁরা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে। না হলে পস্তাতে হবে।” তবেই এটিই প্রথম বা শেষ নয়। তথাগত এ বিষয়ে একাধিক টুইট করেছেন। যার মধ্যে একটির বক্তব্য, বিদ্যাসাগর-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজির সঙ্গে হিন্দি শেখার কোনও বিরোধ নেই। মেঘালয়ের রাজ্যপালের কথায়, “এই মনীষীদের কাল বহুদিন গত, তার পর বাংলার বৃহদংশও গত, এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা– সর্বত্র ঘর ঝাঁট দেয়। বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল।”

এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলতেই হয়, শুধু বাঙালি জাতিকেই নয়, বাংলার গর্ব নেতাজি, সুভাষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রাসঙ্গিকতাকেও পাত্তা দিতে নারাজ তথাগত রায়। তবে এই প্রথম নয়। রাজ্যপালের মতো একটি পদে থেকেও তিনি কোনও দিনই রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেননি। বিজেপির কট্টোর সমর্থক এই রাজ্যপাল বারবার বেফাঁস মন্তব্য করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই বার, হিন্দি কেন বাধ্যতামূলক করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়েই ফের জন্ম দিয়েছেন বিতর্কের।

মোদি দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে, সম্প্রতি নতুন শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশ্যে এসেছে। যাতে বলা হয়েছে, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যের স্কুলগুলিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্থানীয় ভাষা, ইংরেজির সঙ্গে হিন্দিও শিখতেই হবে। এরপরই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী থেকে ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন– সকলেই এর বিরোধিতা করেন। যদিও এর পরে নিজেদের নীতি থেকে পিছিয়ে এসে কেন্দ্র জানিয়েছে,  শিক্ষাক্ষেত্রে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হবে না।