COVID-19 Vaccine: করোনা প্রতিষেধক কী হালাল? টিকাকরণ শুরুর আগেই সংশয়ে ভারতের হিন্দু, মুসলিম ও ইহুদি সম্প্রদায়
করোনা প্রতিষেধক (Photo Credits: Twitter)

এখনও ভারতে করোনার গণ টিকাকরণ (COVID-19 Vaccine) শুরু হয়নি। তার আগেই প্রতিষেধকের মধ্যে নিষিদ্ধ উপাদানের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুধুমাত্র মুসলিমরাই যে এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এমনটা নয়। তালিকায় হিন্দুও ইহুদিরাও রয়েছে। এরমধ্যে আবার ভারতীয় মুসলিমরা নয়া বিতর্কে জড়িয়েছে। আদৌ এই ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত কি না তাই নিয়েই চলচে দ্বন্দ্ব। কেননা মুসলিমরা জানতে পেরেছে যে ভ্যাকসিন তৈরির উপাদানে এমন কিছু রয়েছে যেকারণে ইসলামিক আইন অনুসারে এটিকে হালাল বলা যাচ্ছে না। ফাইজার, মোডের্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভ্যাক্সিন তৈরিতে যে উপাদন লেগেছে তানিয়ে এক একে মুসলিম, হিন্দু এবং ইহুদিরাও প্রশ্ন তুলেছে। ভারতে করোনার টিকাকরণ শুরু হওয়ার আগেই নিষিদ্ধ উপাদান নিয়ে রীতিমতো ঝড় উঠেছে।

কারণ উল্লেখিত প্রত্যেক প্রতিষেধকের মধ্যেই রয়েছে শূকরের উপদান যা ইহুদি ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য হারাম। একইভাবে প্রতিষেধকে রয়েছে গরুর রক্ত, যা হিন্দুদের জন্য কখনওই কাম্য নয়। এদিকে প্রতিষেধকে পর্ক জিলেটিনের অভিযোগ বাতিল করেছে ফাইজার, মোডের্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষেধকে কোনও পর্ক জিলেটিনের উপাদান নেই। সাধারণত পর্ক জিলেটিন নিরাপদ স্টোরের জন্য প্রয়োজন হয়। এবং প্রতিষেধককে এক জায়গা থেক আর এক জায়গায় নিয়ে যেতে যে স্টেবিলাইজেশন প্রয়োজন তাও থাকে এই জিলেটিনে। হালাল উপাদেন প্রতিষেধক তৈরি হলেও বিভিন্ন ইসলামিক দেশ গ্রহণযোগ্যতার নিরিখে অনুমোদিত করোনা প্রতিষেধক সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  আরও পড়ুন-Coronavirus Cases In India: ভারতে করোনাজয়ীর সংখ্যা ছাড়ালো ১ কোটির গণ্ডী, খুব শীঘ্রই শুরু টিকাকরণ

ইংল্যাণ্ডে ফাইজার বায়োএন-টেকের প্রতিষেধক ইতিমধ্যেই জনগণকে দেওয়া শুরু হয়েছে। এই টিকাকে হালাল শংসাপত্র দিয়েছে ব্রিটিশ ইসলামিক মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। এবং অন্যান্য ইসলামিক শিক্ষাবিদরাও এই তথ্যের স্বপক্ষে মতামতা দিয়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে এই ফাইজারের ভ্যাকসিন তৈরিতে কোনও পশুর উপাদন ব্যবহৃত হয়নি। মুসলিমরা পর্কের কোনও উপাদান ব্যবহৃত টিকা নিতে পারবে না, যেহেতু তা ধর্মীয় আইন অনুসারে হারাম। একইভাবে। কোভিড-১৯ প্রতিষেধকের উপাদানে হালাল কিছু আছে বা নেই, এই সংক্রান্ত কোনও মান এখনও প্রকাশিত হয়নি। একথা বলেছেন SMIIC- সাধারণ সম্পাদক। এই প্রসঙ্গে এক হালাল ঔষুধ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, যেহেতু করোনার প্রতিষেধকের কোনও হালাল শংসাপত্র নেই তাই একে হালাল বলা যাবে না। এই প্রসঙ্গে SMIIC-র চিকিৎসক ডক্টর মহম্মদ আলি আলশেখ বলেছেন, হালাল শংসাপত্র দেয় তৃতীয়পক্ষ। প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থা নয়। যেটা ফাইজার করেছে, ওয়ার্ল্ড হালাল অথরিটির মতামত এখানে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে সৌদি আরব, বাহরিন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর মতো ইসলামিক দেশ সিনোফার্ম প্রতিষেধককে অনুমোদন দিয়েছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর ইতিমধ্যেই ফাইজারের করোনা প্রতিষেধককে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ধর্মীয় স্পর্শকাতরতার বিষয়টি দেখার পাশাপাশি প্রতিষেধকে ব্যবহৃত উপাদান যাচাইকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে পর্ক খাওয়া বা মদ্যপান ইসলাম শরিয়তে নিষিদ্ধ থাকলেও। জীবনদায়ী ওষুধের উপাদানে এই দুটির ব্যবহার ইসলাম শরিয়তের অনুমোদন পায়। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার অধ্যাপক আখতারুল ওয়েইসি একথা বলেছেন।