দিন বসন্তোৎসব হচ্ছে পৌষমেলার মাঠে (প্রতীকি ছবি: Wikipedia)

বোলপুর, ১২ ফেব্রুয়ারি: চূড়ান্ত অনিশ্চিয়তার পর দোলের দিনই শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) হতে চলেছে বসন্তোৎসব (Vasant Utsav)। তবে এই বছর আশ্রম মাঠ থেকে সরিয়ে এনে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান করা হবে পৌষমেলার মাঠে (Poush Mela Math)। গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন তরফে প্রশাসনিক সাহায্যের পাশাপাশি বসন্ত উৎসবের সমস্ত খরচ বহন করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করবে বলেও জানা গিয়েছে। সাংস্কৃতিক দিকটা বিশ্বভারতী (Viswavarati) দেখবে, আর বাকিটা দেখবে জেলা প্রশাসন। বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় তিন ঘন্টা বৈঠক চলে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বসন্ত উৎসব প্রায় ২ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে আশ্রম মাঠ থেকে বের হওয়ার বিভিন্ন রাস্তায় হয় জনজোয়ার। প্রায় এক ঘন্টার বেশি মানুষ একই জায়গায় আটকে পড়েন। এবার এই পরিস্থিতি যাতে না হয় তার জন্য আশ্রম মাঠ থেকে বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠান অপেক্ষাকৃত ফাঁকা পৌষমেলার মাঠে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে বসন্ত উৎসব পৌষমেলার মাঠে সরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু এত মানুষ সেবার উৎসবে এসেছিলেন যে অনুষ্ঠান করাই কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই উৎসব আশ্রম মাঠে সরিয়ে আনা হয়। সূত্রে খবর, এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে বিশ্বভারতীকে জানিয়ে দেওয়া হয়, উৎসবের পুলিশি ব্যবস্থা থেকে সব ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা করবে জেলাপ্রশাসন। বিশ্বভারতী শুধু অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে। এমনকি অনুষ্ঠান করতে যা খরচ হবে তা দেবে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, গত বছর বসন্ত উৎসব করতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে ছিল। সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী এদিন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, “বসন্ত উৎসবের সঙ্গে বাঙালিদের আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল দোলের দিন বসন্ত উৎসব হোক। কিন্তু গত বছর যে কাণ্ড ঘটে ছিল তা থেকে মুক্তি পেতে রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম।” বসন্ত উৎসব নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগের কনফারেন্স হলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আরও পড়ুন: Kolkata: ক্যানসার আক্রান্ত বাবার শেষ ইচ্ছেতে হাসপাতালেই বসল মেয়ের বিয়ের আসর

এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakraborty), ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায়, কর্মসমিতিতে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যরা। জেলা প্রশাসনের তরফে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা, জেলা পুলিশসুপার শ্যাম সিং-সহ বিভিন্ন আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। এই বিষয়ে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, বসন্ত উৎসবে জেলা প্রশাসনের তরফে পুলিশি সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি পরিকাঠামোগত সব ধরনের সাহায্য দেবে জেলা প্রশাসন। বিশ্বভারতী চিঠিতে আর্থিক সাহায্যের কথা বলেছিল, সেটা করতেও জেলা প্রশাসন রাজি। রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জেলা পুলিশ আশ্রম মাঠে ভিড় এড়াতে পৌষমেলার মাঠে করতে চাইছে। বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ এই বিষয়ে রাজি হয়েছে।