করোনা ভাইরাস (Photo Credits: Wikipedia)

কলকাতা, ২৩ জানুয়ারি: আফ্রিকার ইবোলার ভাইরাসের (Ebola Virus) আতঙ্ক এখনও পিছু ছাড়েনি দেশবাসীর। সেই ভয়াবহ স্মৃতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার মাথাচারা দিয়েছে চিনের করোনা ভাইরাস (Coronavirus)। মারণ জীবাণুর আতঙ্ক ঝড়ের গতিতে ছড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে। যার আঁচ এসে পড়েছে গোটা ভারত (India) থেকে কলকাতাতেও (Kolkata)। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় তেমন উপযোগী চিকিৎসা পরিকাঠামো নেই কলকাতায়। কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্রমেই চওড়া হচ্ছে তাঁদের।

তবুও সাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ দেশের সাতটি বিমানবন্দরে (Air Port) চরম সতর্কতা জারি হয়েছে। চিন থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বসানো হয়েছে থার্মাল ক্যামেরা। বেলেঘাটা (Beliaghata) আইডি-তেও খোলা হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। কিন্তু কলকাতা তো ছাড়, ভারতের কোনও ল্যাবরেটরিতেই করোনা ভাইরাস (Virus) নির্ণয়ের ক্ষমতা নেই বিউলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। রোগ ধরতে হলে সন্দেহভাজনের লালার নমুনা পাঠাতে হবে আমেরিকার আটলান্টা (Atlanta, America ) কিংবা চিনের ইউহানে (Uhan, Chaina)। ফলে করোনা ভাইরাস রোগীর দেহে আদৌ বাসা বেঁধেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে মাস কাবার হয়ে যাবে। আর ততদিনে সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগীর শারীরিক অবস্থার বড়সড় ক্ষতি তো হবেই, মৃত্যু ঘটে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। আর এই অসহায় পরিস্থিতিই করোনা-আতঙ্ককে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। উদ্বেগের পারদ চড়ছে রাজ্যের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের মনে। জানা গিয়েছে, নিপা থেকে সার্স– অনেক ভাইরাসই নির্ণয় করতে পারে পুণের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (National Institute Of Virology)।’ করোনার ক্ষেত্রেও আপাতত সেখানেই পাঠানো হবে নমুনা। কিন্তু সেখানেও পরীক্ষা হবে না। সিল-প্যাক হয়ে তা উড়ে যাবে আটলান্টা বা চিনে। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক অসহায়তার নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) তরফে। সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী, রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে করোনা ভাইরাস নিয়ে একটি ‘অ্যাডভাইসরি’ (Advisory) বিজ্ঞপ্তি রাজ্যগুলিকে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য এখনও নিজস্ব কোনও ‘প্রোটোকল’ তৈরি করতে পারেনি। তাই কেন্দ্রের অ্যাডভাইসরিই এদিন বিকেলে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। বেলেঘাটা আইডি-তে দুই শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি রাখা হয়েছে। চিকিৎসক-নার্সরা অসুখের মোকাবিলায় প্রস্তুত। আতঙ্ক ছড়ালেও এখনও পর্যন্ত ভারতে একটিও ‘করোনা কেস’ পাওয়া যায়নি। চিন (Chaina) থেকে আসা সব যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। রোগীদের জ্বর মাপার জন্য থার্মাল ক্যামেরা বসানো হয়েছে। চিন থেকে কলকাতার রোজ উড়ান (Flight) রয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আরও পড়ুন: Wuhan Coronavirus: করোনা ভাইরাস এবার মার্কিন মুলুকে, সিয়াটেলের আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভর্তি করা হল হাসপাতালে

চিনে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। রোগের উৎপত্তিস্থল ইউহানের একটি সামুদ্রিক মাছের বাজার বলেই মিলছে খবর। এই সংক্রমণের জেরেই ভারত-সহ প্রতিবেশী দেশগুলিতে সতর্কতা (Red Alert) জারি হয়েছে। হংকং, থাইল্যান্ড, ম্যাকাও, মেক্সিকো ও আমেরিকাতেও করোনা আক্রান্ত রোগীর হদিশ মিলেছে। রোগের মোকাবিলায় প্রস্তুত আটলান্টার ল্যাবরেটরি।