ভারতে প্রতি বছর ২২ ডিসেম্বর পালন করা হয় জাতীয় গণিত দিবস। ভারতের মহান গণিতবিদ রামানুজন, যিনি গণিতের ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন, তাঁর জন্মদিনে পালন করা হয় এই বিশেষ দিনটি। ১৮৮৭ সালের ২২ ডিসেম্বর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীনিবাস রামানুজন। শৈশব থেকেই গণিত খুব পছন্দ করতেন এবং গণিতে ভালো নম্বর পেতেন তিনি। গণিতের প্রতি যতটা আগ্রহ ছিল অন্য বিষয়ে ততটা আগ্রহ ছিল না তাঁর। গণিত ছাড়া অন্য বিষয়ে এতটাই দুর্বল ছিলেন যে পাশ নম্বরও পেতেন না তিনি। কিন্তু গণিতকে এতটাই ভালোবাসতেন যে এই বিষয়ে নিজের একটা পরিচয় তৈরি করেন রামানুজন।
গণিত বিষয়ে এতটাই ভালো ছিলেন যে স্কুলগুলি থেকে বৃত্তি পেতে শুরু করেন এবং মাত্র ১২ বছর বয়সে ত্রিকোণমিতিতে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন শ্রীনিবাস রামানুজন। ত্রিকোণমিতির উপর লোনির বিশ্ব বিখ্যাত বই পড়ার পর নিজের গাণিতিক তত্ত্ব তৈরি করেন এবং কারোর সাহায্য ছাড়াই খুব অল্প বয়সে অনেক উপপাদ্য তৈরি করেছিলেন তিনি। এই বিশেষ অবদানের জন্য ভারত সরকার তাঁকে অনেক সম্মানে ভূষিত করে। এরপর অনেক নতুন গাণিতিক সূত্র রচনা করেন তিনি। ১৯২০ সালের ২৬ এপ্রিল খুব অল্প বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় শ্রীনিবাস রামানুজনের।
২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২২ ডিসেম্বর জাতীয় গণিত দিবস উদযাপনের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সুপরিচিত গণিতবিদরা বিশ্বাস করেন যে মানুষের জীবনের বিকাশে গণিতের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। গণিতকে সরলীকরণ এবং মানুষের মধ্যে গতিতে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য অনেক প্রচেষ্টা করেছিলেন বিশ্ব বিখ্যাত গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজন। তাই গণিত সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাই জাতীয় গণিত দিবস পালন করার মূল উদ্দেশ্য।