Attacks on Christian Community in Pakistan

ইসলামাবাদ : পাকিস্তানে ১৯টি চার্চ ভস্মীভূত। পুড়ে ছাই ৮৯টি খ্রিস্টান পরিবারের বাড়ি। ঘটনাটি ঘটেছে সেদেশে ফয়জলাবাদের জরানওয়ালায়। হিউম্যান রাইটস ফোকাস পাকিস্তান (এইচআরএফএপ) -এর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৬ অগাস্ট চার্চ এবং খ্রিস্টানদের উপরে দুষ্কৃতী হানা হয়, সেইসময় ১৯টি চার্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় দুটি চার্চ এবং কয়েকটি প্রার্থনা কক্ষ ও কমিউনিটি হলও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, ৪০০টিরও বেশি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া ওই ৮৯টি বাড়িও রয়েছে। প্রকাশিত রিপোর্ট আরও বলা হয়েছে, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের চার্চের যাজক ও ধর্মযাজকদের মোট ১৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এইচআরএফপি সূত্রে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর যে দুষ্কৃতী হানার ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক, পুলিশ কর্তা, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেও ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হয়েছে।

জরানওয়ালায় ঘটনাস্থলে গিয়ে এইচআরএফপি টিম ১৫০ জন পীড়িত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য এবং চার্চের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেছে। সেই সময় ভয়াবহ এই দুষ্কৃতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে চার্চ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সাহায্যের আশ্বাস চাওয়া হয়। ভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনাস্থল এবং ঘরদোর পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও, গৃহস্থালীর মালপত্র লুট করা হয়েছে এবং বাদবাকি আগুনে জালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থল সরেজমিনে ক্ষতিয়ে দেখা মানবাধিকার কর্মীদের বক্তব্য, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। এমনকি, ঘরদোর হারা পীড়িতরা এতটাই ভয় পেয়েছেন যে তাঁরা কেউই আর বাড়ি ফিরতে চাইছেন না।

উল্লেখ্য, গত ১৬ অগাস্ট সকালে পাকিস্তানি দণ্ডবিধির ২৯৫বি ও ২৯৫সি ধারায় দুই ক্রিস্টান ব্যক্তির বিরুদ্ধে এইফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে বলা হয়েছে, জরানওয়ায় বসবাসকারী ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ রয়েছে। তারা ইসলাম এবং নবী মহম্মদকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছে। দুই অভিযুক্ত এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে এবং ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে তাদের শুনানি চালানো হয়েছে। রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী আক্রান্তদের দাবি, সেদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের ব্যক্তিরাই এর পিছনে মদত দিয়েছে। এদিকে, এইআরএফপি সভাপতি নভীদ ওয়াল্টারের বক্তব্য, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ রয়েছে, তার মানে এই নয় যে তাদের দোষ প্রমাণিত।