মমতা ব্যানার্জি। (Photo Credit: Twitter)

কলকাতা, ২ সেপ্টেম্বর: ইস্টওয়েস্ট মেট্রোর কাজের সময় ভূগর্ভস্থ জল ঢুকে বউ বাজার এলাকর অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে, এনিয়ে মঙ্গলবারই নবান্নে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেট্রোর জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়েই বউ বাজারের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িগুলি ভাঙনের মুখ এসে পৌঁছেছে। দুদিন আগে যখন প্রথম ফাটল দেখা দিয়েছিল তখনই শুকনো মুখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। তবে খবর পেয়েই প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে সুজিয়ে বাড়ির বাইরে পাঠানো হয়। নিজেদের বাড়ি থাকতেও তাঁর এখন হোটেল উঠেছেন। বিপর্যয় এড়াতে কার্যত এক কাপড়েই বাড়ি থেকে তাঁদের বেরিয়ে আসতে হয়েছে। কিছুই সঙ্গে করে আনতে পারেনি। আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বউবাজারে যান ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া হয়ে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ধরে তাঁর গাড়ি যত এগিয়েছে ততই তিনি উদগ্রীব হয়েছেন। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিপদে পড়া বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আগামিকাল মঙ্গলবার নবান্নে এই নিয়ে তিনি বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা ছাড়াও কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর প্রতিনিধিরা থাকবেন। পাশাপাশি পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে চার জনের প্রতিনিধি ঠিক করে দিতে। তাঁরাও নবান্নের ওই বৈঠকে থাকবেন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস বাণীর মধ্যেই অনেকে হতাশা গোপন করতে পারছিলেন না। তাঁরা যে কিছুই সঙ্গে করে আনতে পারেননি। টাকা পয়সা গয়নাগাটি সবই ওই বিপদগ্রস্ত বাড়িতেই রয়ে গিয়েছে। কাগজপত্রেরই বা কী হবে। অনেকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে চেয়ে কাকুতি মিনতিও করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে জানান, প্রাণ চলে গেলে আর ফিরে পাবেন না। কাগজ নষ্ট হলে ফের তৈরি করে দেওয়া যাবে। আরও পড়ুন-মেট্রোয় টানেল বিপত্তিতে বৌবাজারে বিপর্যয় : পুরো ধসে পড়ল ৪টি বাড়ি, বড় ক্ষতি ১৪টি বিল্ডিংয়ে, ২৮৪জন বাসিন্দাকে সরানো হল হোটেলে

উল্লেখ্য, মাটির নিচে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলছিল। টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে কাজ করার সময় ভূগর্ভস্থ জল ঢুকে বিপত্তি ঘটে। তার জেরে শনিবার থেকে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একাধিক বাড়ির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। রবিবারই ওই এলাকার ১৮টি বাড়ি থেকে মোট ২৮৪ জনকে সরিয়ে বাড়িগুলি খালি করে দেওয়া হয়। আজ এখানেই পরিদর্শনে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।