
২০২৫ সালে মহাশিবরাত্রি পালন করা হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। শিবপুরাণ অনুসারে, ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর মধ্যে বিরোধ নিরসনের জন্য শিবলিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন মহাদেব। যেদিন এই ঘটনাটি ঘটেছিল, সেদিন ছিল ফাল্গুন কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথি, সেই কারণেই এই তিথিতে পালন করা হয় মহাশিবরাত্রি। এই উৎসবে শিব মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হয় এবং উপবাস পালন করা হয়। কথিত আছে যে মহাশিবরাত্রির দিনে ভোলেনাথ পৃথিবীর সমস্ত শিবলিঙ্গে বাস করেন, তাই মহাশিবরাত্রিতে করা শিবের পুজো বহুগুণ বেশি ফল দেয়। অনেকে এই দিনে তাদের বাড়িতে রুদ্রাভিষেকও করেন। ভগবান ভোলেনাথের পুজো নানাভাবে করা হয় এই দিনে। মহাশিবরাত্রিতে বেলপত্র দিয়ে ভগবান শিবের বিশেষ পুজো করলে অর্থ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয় ভক্তদের।
পঞ্জিকা অনুসারে, ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি শুরু হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১:০৮ মিনিটে এবং শেষ হবে পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ০৮:৫৪ মিনিটে। মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে, রাতের বেলায় ভগবান শিবের পুজো করা হয়। তবে ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, মহাশিবরাত্রি উৎসবে চারটি প্রহরে মহাদেবের পুজো করা যেতে পারে। প্রতিটি প্রহরে ভগবান শিবের বিভিন্ন ধরণের পুজোর বর্ণনা রয়েছে। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, সাধনা করা উচিত নিজের বিশ্বাস, সময়, পরিস্থিতি এবং শারীরিক অবস্থা অনুসারে। চারটি প্রহরে সাধনা করলে ধন, খ্যাতি, প্রতিপত্তি এবং সমৃদ্ধি লাভ হয়। জীবনে সন্তান সম্পর্কিত সমস্যার সম্মুখীন হলেও এই সাধনা করা উচিত। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক চারটি প্রহরের পুজোর সময় সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রথম প্রহরের পুজোর সময় থাকবে ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ০৬:১৯ মিনিট থেকে রাত ০৯:২৬ মিনিট পর্যন্ত। দ্বিতীয় প্রহরের পুজোর সময় থাকবে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ০৯:২৬ মিনিট থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২:৩৪ মিনিট পর্যন্ত। তৃতীয় প্রহরের পুজোর সময় থাকবে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২:৩৪ মিনিট থেকে ভোর ০৩:৪১ মিনিট পর্যন্ত। চতুর্থী প্রহরের পুজোর সময় থাকবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ০৩:৪১ মিনিট থেকে সকাল ০৬:৪৮ মিনিট পর্যন্ত। মহাশিবরাত্রির দিন, পঞ্চামৃত দিয়ে ভগবান শিবকে স্নান করানো হয় এবং ৮টি পাত্র জাফরান জল উৎসর্গ করে সারা রাত ধরে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়। এরপর শিবলিঙ্গে চন্দনের তিলক লাগিয়ে বেল পাতা, ভাং, ধুতুরা, আখের রস, তুলসী, জায়ফল, পদ্মের বীজ, ফল, মিষ্টি, মিষ্টি পান, সুগন্ধি এবং দক্ষিণা অর্পণ করা হয়। সবশেষে, জাফরান মিশ্রিত ক্ষীর পরিবেশন এবং প্রসাদ বিতরণ করা হয়।