আরও জট পাকছে ট্যংরায় (Tangra) দে পরিবার খুনের ঘটনায়। বর্তমানে আগের থেকে কিছুটা হলেও সুস্থ রয়েছেন প্রণয় দে, প্রসূন দে ও তাঁদের নাবালক ছেলে প্রতীক দে। অতুল সূর রোডের বাডিতে আদপে কী ঘটেছিল, কেন এরকমভাবে মর্মান্তিক মৃত্যু হল বাড়ির দুই বৌ ও নাবালিকা মেয়ের, সেই রহস্য এখনও সমাধান হচ্ছে না। সম্প্রতি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছিল, যেখানে জানা গিয়েছিল দুই গৃহবধূ রোমি, সুদেষ্ণা ও নাবালিকা প্রিয়ম্বদাকে খুন করা হয়েছে। তবে প্রসূন দে-র বয়ান অনুযায়ী পরিবারের ৬ সদস্যই আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। মূলত, আর্থিক সমস্যার কারণে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়।

নির্মম অত্যাচারের শিকার নাবালিকা?

এখানেই পুলিশের প্রশ্ন, যদি ৬ সদস্য একইভাবে আত্মঘাতী হতে চেয়েছিলেন, তাহলে গাড়িতে করে নাবালককে নিয়ে শহর ঘুরছিলেন কেন প্রসূন আর প্রণয়। বাড়িতেই অনায়াসে আত্মহত্যা করতে পারতেন। এমনকী ঘটনার আগের রাতে যদি ৬ জনই বিষ মেশানো পায়েস খেয়ে থাকেন, তাহলে সকালে ঘুম থেকে কেন শুধু তিন ভাই উঠলেন? আর যদি বাকিরাও উঠে থাকেন, তখনই কী বাকিদের আবারও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাত ও গলার শিরা কেটে খুন নিশ্চিত করা হয়? সেক্ষেত্রে নাবালিকার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল কেন? তাহলে কী সে শেষমুহূর্তে নিজের জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলেন, সেই কারণেই তাঁকে মারধর করে খুন করা হয়?

পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে স্ত্রী ও মেয়েকে?

এখান থেকে উঠে আসছে নাবালককে নিয়ে প্রশ্ন। মেয়ে ও স্ত্রীদের খুনের পর বাচ্চা ছেলেকে কেন বাঁচাতে চেয়েছিলেন প্রসূন ও প্রণয়? এমনকী তাঁকে নাকি হাসপাতালে নামিয়ে দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। খুন বা আত্মহত্যা মোটিভ কী এটা জানাই এখন মূল উদ্দেশ্য তদন্তকারীদের। এমনকী ঘটনার আগের দিন রাতেই বাড়ির চারপাশে থাকা মোট ২২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। রাত থেকেই বন্ধ ছিল সকলেই মোবাইল ফোন। সকালের দিকে যখন প্রসূণ ও প্রণয় বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন তখন তাঁদের হাতে ছিল মদের বোতল। ফলে নেশাগ্রস্থ হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অনুমান পুলিশে।

মুহূর্তের মধ্যে বয়ান বদলাচ্ছে দে পরিবারের দুই ভাই

হাসপাতালের বেডে ক্ষণে ক্ষণে বয়ান বদলাচ্ছেন দুই ভাই। কখনও প্রসূন বলছেন তিনি সবাইকে খুন করেছেন। কখন প্রণয় বলছেন, তিনি তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করেছেন। আবার পরবর্তীকালে সেই বয়ানও বদলে যাচ্ছে। ফলে পুলিশ দুজনকে শীঘ্রই হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছে। তবে তাঁদের আগে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার প্রয়োজন। যদিও প্রণয়কে এনআরএস-এর অর্থোপেডিক বিভাগে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে একটি বেড পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে প্রসূন ও নাবালকক আপাতত বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীনই রয়েছেন।