ভারতের সাংস্কৃতিক চেতনা, উৎসব, গ্রহণযোগ্যতা এবং সামাজিক অনুভূতির একটি অধ্যায় হল কুম্ভ স্নান। অতীত থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত সনাতন ধর্মের শিকড়কে শক্তিশালী করে এবং হিন্দু সংস্কৃতির ঐক্যের পথ প্রশস্ত করে কুম্ভ। বর্তমান যুগে সংস্কৃতির সম্পূর্ণতা, সার্বভৌমত্ব এবং সার্বজনীনতার জন্য একটি আশীর্বাদ হল এই কুম্ভ। ঐতিহাসিক প্রমাণ অনুসারে, কুম্ভমেলার ইতিহাস ৮৫০ বছরের পুরোনো, যদিও অনেক নথিতে এর সূচনা ৫২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ বলে জানা গেছে।

পণ্ডিতদের মতে, কুম্ভমেলা সুসংগঠিত ছিল গুপ্ত আমলে। একই সঙ্গে, সম্রাট শিলাদিত্য হর্ষবর্ধনের ৬১৭-৬৪৭ সালের সময়কালেও এর কিছু তথ্য পাওয়া যায়। পরে শ্রীমদ্‌ জগৎগুরু শঙ্করাচার্য এবং তাঁর শিষ্য সুরেশ্বরাচার্য দশনামী সন্ন্যাসী আখড়াগুলির জন্য সঙ্গমের তীরে স্নানের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের চেয়েও প্রাচীন এই কুম্ভ বলে উল্লেখ রয়েছে বেদ ও পুরাণে। বেদের অনেক জায়গায় পাওয়া গিয়েছে 'কুম্ভ' শব্দটি। তবে এর অর্থ কুম্ভ কোনও অনুষ্ঠান বা উৎসবের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং জলের প্রবাহ বা কলস ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত।

ঋগ্বেদ পরিশিষ্টে প্রয়াগ এবং স্নান তীর্থযাত্রার উল্লেখ রয়েছে। বৌদ্ধধর্মের পালি ধর্মগ্রন্থ মাজ্জিমা নিকায়ের অনুচ্ছেদেও এর উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি মহাভারতেও প্রয়াগে পবিত্র স্নানকে পাপের প্রায়শ্চিত্তের উপায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মৎস্য পুরাণের ১০৩-১১২ অধ্যায়েও হিন্দু তীর্থযাত্রা এবং প্রয়াগের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থগুলিতেও প্রয়াগ এবং অন্যান্য নদীর তীরে উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায়, এর মধ্যে রয়েছে সেই স্থানগুলি যেখানে বর্তমান যুগে আয়োজন করা হয় কুম্ভমেলা।