নতুন দিল্লি, ২৪ জানুয়ারি: চিনের (China) উহান ও শেনঝান প্রদেশে প্রথম বিদেশি হিসেবে করোনা ভাইরাসে (Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ বছরের এক প্রবাসী ভারতীয় শিক্ষিকা। গত শুক্রবার থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন শেনঝানের একটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক প্রীতি মাহেশ্বরী (Preeti Maheshwari)। তিনি মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেই রোগেরই চিকিত্সা চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডাক্তাররা। তবে তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ভারতীয় মূল্যে ১ কোটি টাকা। এ কথা জানিয়েছেন ওই শিক্ষিকার স্বামী অশুমান খোয়াল। দিল্লির ব্যবসায়ী অশুমান জানিয়েছেন, ICU-তে চিকিত্সা চলছে প্রীতির। তাঁকে ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখা হয়েছে। প্রীতির পরিবার আর্থিক সহায়তার জন্য ভারতে পৌঁছেছে। প্রীতি মাহেশ্বরীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের জন্য তাঁর ভাই মণীশ থাপা বেজিংঙে ভারতীয় দূতাবাসে পৌঁছেছেন। এছাড়া তিনি ভারতের বিভিন্ন এনজিও-র সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন।
শেনঝানের আন্তর্জাতিক স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটি প্রাথমিক শিল্প বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রীতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তাঁর শ্বাসতন্ত্র, একাধিক অঙ্গ ঠিকভাবে কাজ করছে না। তিনি চিনের শেনঝানের শেকৌ হাসপাতালে আইসিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন। তাঁকে বাহ্যিক শ্বাসযন্ত্রের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি রক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়াতে আছেন। আরও পড়ুন: Indian Embassy In Beijing Cancels Republic Day Ceremony: করোনা ভাইরাসের থাবা, বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসে বাতিল প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান
প্রীতির ভাই মণীশ থাপা বলেন, “১১ জানুয়ারি দিদিকে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে চিকিৎসা ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে এই চিকিত্সার জন্য ভারতীয় মুদ্রায় ১ কোটি টাকা প্রয়োজন। চিকিত্সা ব্যয় সম্পর্কে সচেতন হতেই আমি স্বাস্থ্যসেবা তহবিল প্ল্যাটফর্ম ImpactGuru.com-এর সাহায্য নিয়েছি। প্রীতি গুরুতর অসুস্থ এবং চিকিত্সা ব্যয় পরিবারের সাধ্যের বাইরে ছিল।" জানা যাচ্ছে, ImpactGuru.com ইতিমধ্যেই চারদিনে ১৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা তুলেছে। মণীশ জানান, প্রীতির স্বাস্থ্যের উন্নতির প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে। প্রীতির হার্টের হার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে এবং এমআরআই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাঁকে এখনও লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আর স্বাভাবিক হওয়া দীর্ঘ পথ। তিনি জানান, পরিবার প্রয়োজনে আরও চিকিত্সার জন্য প্রীতিকে ভারতে স্থানান্তর করার বিষয়টিও বিবেচনা করছে। মণিশ বলেন, “ভারতে স্থানান্তরিত করার বিষয়ে ভাবার আগে তাঁর সুস্থ হওয়া দরকার। আমরা ভারত সরকারের কাছেও আবেদন জানিয়েছি এবং আমরা আশাবাদী যে আমরা সহায়তা পাব।"
এদিকে পরিস্থিতির উপড় কড়া নজর রাখছে চিনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। সেদেশে থাকা কোনও ভারতীয় এই ভাইরাস সংক্রান্ত কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়লে তাদের জন্যে খোলা হয়েছে হটলাইন নম্বর। ভারতীয় দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, -০৮৬১-৮৬১২০৮৩৬২৯ এবং ০৮৬১-৬১২০৮৩৬১৭ নম্বরে ফোন করে চিনে থাকা যে কোনও ভারতীয় করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় পড়লে যোগাযোগ করতে পারেন। পাশাপাশি বেজিংয়ে অবস্থিত ভআরতীয় দূতাবাসের অফিসায়ার টুইটার ও পেসবুক অ্যাকাউন্টেও যোগাযোগ করে নিজেদের অসুবিধার কথা জানাতে পারেন ভারতীয়রা।