করোনা ভাইরাস(Photo Credits: AFP)

বেজিং, ২৪ জানুয়ারি: করোনা ভাইরাসের (coronavirus) থাবা, ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান (Republic Day ceremony) বন্ধ রাখল বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস (Indian embassy)। শুক্রবার দূবাসের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো পোস্ট করে অনুষ্ঠান স্থগিতের খবর জানানো হল। চিনে ইতিমধ্যে মহামারির আকার নিয়েছে করোনা ভাইরাস। ২৫ জনের প্রাণ কেড়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। একে তো করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক পাশাপাশি সংক্রমণ ঠেকাতে বেজিং বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহর থেকে বাইরে যাওয়ার সমস্ত পরিবহন পরিষেবা আপাতত বন্ধ। খুব প্রয়োজন না থাকলে বাড়ির বাইরে বেরতে নিষেধ করা হচ্ছে বাসিন্দাদের। বেরলে প্রয়োজনীয় সুরক্ষাবলয় যেন সঙ্গেই থাকে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দূতাবাসে যদি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান হয়, তাহলে প্রচুর জনসমাগম হবে। যাতে ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে।

চিনে করোনা ভাইরাসের ইতিহাস রয়েছে। ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল। মহামারির আকার নিয়েছিল ‘সার্স’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)। চিনের মূল ভূখণ্ডেই মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৪০০ জনের। হংকংয়ে অন্তত ৩০০। ২০০৯ সালে ফের সোয়াইন ফ্লু-র ছোবল। শয়ে শয়ে মৃত্যু। সরকারি হিসেবেই সংখ্যাটা ছিল সাতশোর কাছাকাছি। দশ বছরে সংক্রমণের ধাক্কাটা থিতিয়ে যাওয়ার মুখেই চিনের মাটিতে ফের শুরু হল মৃত্যুমিছিল। এবারের হানাদার এক ‘রহস্য ভাইরাস।’ ফুসফুসে যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল এবং শেষ পরিণতি মর্মান্তিক মৃত্যু—এই রহস্য ভাইরাসের আক্রমণের পদ্ধতি ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের। চিন থেকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড হয়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণের সতর্কতা জারি হয়েছে ভারতেও। আরও পড়ুন-Wuhan Coronavirus: করোনা ভাইরাস এবার মার্কিন মুলুকে, সিয়াটেলের আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভর্তি করা হল হাসপাতালে

ইংরেজি নববর্ষের আনন্দে অনেকেই চিনে বেড়াতে এসেছেন। সংক্রমণ এড়াতে প্রায় ২০ মিলিয়ন লোককে সরিয়ে নিয়েছে চিনা প্রশাসন। অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল, বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরবন্দি লোকেদের মধ্যে। গতকাল উহানে এ নিয়ে সরকারি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে একই নির্দেশ আসে হুয়াংগ্যাংয়ের বাসিন্দাদের কাছেও। ৭৫ লক্ষ মানুষের বাস এই শহরে। গত কাল মধ্যরাতে ট্রেন-সহ সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় সিনেমা হল, সাইবার কাফে, বাজার-দোকানও। চিনা সোশ্যাল মিডিয়া ‘উইবো’তে গৃহবন্দি একজন লিখেছেন,‘‘মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর শেষ দিন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।