অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo Credit: Twitter)

কলকাতা, ১৫ অক্টোবর: ছেলে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় (Avijit Binayak Banerjee) অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন, এই খবরে প্রস্তুত ছিলেন না নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় (Nirmala Banerjee)। এই খবরে অভিজিৎবাবুর বালিগঞ্জের বাড়িতে ভিড় জমে যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ছেলেকে হাতে ধরে সব কিছু শিখিয়ে দেওয়ায় তিনি বিশ্বাস করেননি কোনও কালেই। বললেন, “ও যা করেছে, যা করতে চেয়েছে, যে পথে এগোতে চেয়েছে, তাতেই আমার সায় ছিল। আমাকে অনেকেই বহুবছর ধরে বলেন, ও ভাল কাজ করছে। আজ ও তার যোগ্য সম্মান পেল।” ছেলে নোবেল পেয়েছেন। মায়ের তো গর্ব হবেই।

বছর আশির নির্মলাদেবী কৃতী ছেলের প্রসঙ্গ উঠতেই যেন পুরোনো দিনে হারিয়ে গেলেন, “ও তো প্রথমে ঠিকই করতে পারছিল না কী নিয়ে পড়বে। শুরুতে ভেবেছিল ফিজিক্স পড়বে। তারপর নিজেই বলল পড়বে না। ভর্তি হল স্ট্যাটিটিক্স নিয়ে। কিছু দিন ক্লাস করার পর বলল, বিটি রোডে যেতে আসতেই অর্ধেক সময় চলে যাচ্ছে। তারপর অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হল প্রেসিডেন্সিতে।” সেখান থেকে স্নাতক হওয়ার পর অভিজিৎবাবুর পড়াশোনা দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর হার্ভার্ড। বছরে তিন-চার বারের বেশি দেখা হয় না মা-ছেলের। মাঝে মাঝে এ শহরে আসার সুযোগ হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা গবেষকের। কথা প্রসঙ্গে পুত্রবধূ এস্থারও এসে যায়। বলেন, “অনেক দিন এস্থার এসে কলকাতায় ছিল। এই বাড়ি থেকেই বিয়ে হয়েছিল ওদের।” আরও পড়ুন-Nobel Prize: নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ ব্যানার্জি সম্পর্কে এই ১০ টি তথ্য জানতেন?

দেশের ট্যাক্স পলিসি নিয়ে বেশ চিন্তিত নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিজিৎ সহজ ভাষায় কথা বলে। যাতে সবাই বুঝতে পারে। লেখেও সেই ভাষায়। এটা ওর বড় গুণ। ভারতের নতুন ট্যাক্স পলিসি নিয়ে আমার একটা কৌতূহল আছে। কোথাও বুঝতে অসুবিধে হলে ওকেই জিজ্ঞেস করি। ও আমায় বুঝিয়ে দেয়।” অভিজিৎবাবুর জন্ম মহারাষ্ট্রের ধুলেতে। ১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। নির্মলাদেবীও মারাঠা মুলুকের ভূমিকন্যা। ঝরঝরে বাংলা বলতে পারলেও এখনও একটা টান আছে। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক। নির্মলাদেবী জানালেন, “আমরা আগে থাকতাম মহানির্বাণ রোডে। পাশেই একটা বস্তি ছিল। ওখানে বস্তির ছেলেদের সঙ্গে খেলতে যেত অভিজিৎ। রাস্তাতেও খেলত। আমরা আটকাতাম না। তখন থেকেই তাদের দারিদ্র্য নিয়ে ওর একটা কৌতূহল ছিল।”