Jadavpur University : সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুক্ত বাবুল সুপ্রিয়, উদ্ধার করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর
রাজ্যপালের গাড়িতে বাবুল সুপ্রিয় (Photo: ANI)

কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর : কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তাঁরা ৩ নম্বর গেট দিয়ে বের হন। তাঁদের আটকে রাখার পালটা হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ, BJP ও ABVP-র সদস্যদের বিরুদ্ধে।  ছাত্র সংসদ ও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ঘরে ভাঙচুর চলানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় রাস্তায় সাইকেলে আগুন লাগানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে দমকলের ইঞ্জিন।

আজ ABVP-র নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন। এ দিন দুপুরে বাবুল সুপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছতেই বিক্ষোভ শুরু করে একদল পড়ুয়া। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে বাবুলের পথ আটকানো হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিছু হঠেননি, তিনি অনুষ্ঠানস্থানের দিকে এগোতে থাকেন। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, তার পরেই শারীরিক ভাবে বাবুলকে হেনস্থা করা। তাঁকে ঘিরে ধরে কিল, চড়, ঘুসি, লাথি চলতে থাকে। তাঁর চুলের মুঠি ধরে টানার দৃশ্যও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশের হাতে হেনস্থা হতে হয় বাবুলকে। আরও পড়ুন : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের মুখে বাবুল সুপ্রিয়, উঠল 'গো ব্যাক' স্লোগান; সাংসদকে হেনস্থার অভিযোগ

গোটা ঘটনায় যা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে কাঠগড়ায় তোলেন বাবুল। উপাচার্য উদ্দেশ্য করে বাবুল বলেন, '' আমায় যখন নিগ্রহ করা হচ্ছে তখন আপনি কোথায় ছিলেন? এতক্ষণ আপনি আসেননি কেন। আপনি দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। আসলে আপনি চাইছিলেন এটা হোক।" বাবুল সুপ্রিয় উপচার্য সুরঞ্জন দাসকে উদ্দেশ্য করে বারবার বলতে থাকেন, আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? আমি যখন এলাম, তখন আপনি আসেননি কেন? উত্তেজিত বাবুলের সামনে হাতজোড় করে অনুরোধ করতেও দেখা যায় উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস নিজে বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন একটা পর্যায় পর্যন্ত। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বাবুল এবং সুরঞ্জন, দু’জনেই পড়ে গিয়ে চোট পান বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কিতে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

নিরাপত্তারক্ষীদের চেষ্টায় কোনওক্রমে অনুষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট হলে পৌঁছন বাবুল। সেখানে অনুষ্ঠান সেরে তিনি যখন বেরোতে যান, তখন আরও বড় জমায়েত নিয়ে পথ আটকায় বিক্ষোভকারীরা। ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে বাবুল সুপ্রিয় বেরতে পারছেন না দেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও কিছু জওয়ানকে সেখানে পাঠানো হয়। তবে বাহিনী বলপ্রয়োগের রাস্তায় হাঁটেনি, ফলে বাবুল সুপ্রিয়কে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধারও করা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে। এরপরই আসরে নামেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। মুখ্যসচিব ও যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে ফোন করেন তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকেও তিনি ফোন করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এভাবে আটকে রাখা যায় না। প্রয়োজনে উপাচার্যকে পুলিশের সাহায্য নেওয়ার কথাও তিনি বলেন। কিন্তু রাজ্যপালের পুলিশের সাহায্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন সুরঞ্জন দাস। ক্যাম্পাসে পুলিস ডাকলে পরিস্থিতি আরও আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে বলে জানান তিনি। মুখ্যসচিবকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরই রাজ্যপাল যাদবপুরে এসে পৌঁছোন। বিক্ষোভের মুখ পড়েও তিনি পিছু হটেননি। ভিড় ঠেলেই বাবুল সুপ্রিয়কে হাত ধরে তিনি উদ্ধার করে এনে নিজের গাড়িতে বসান। যদিও রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যপালের গাড়ির সামনে বসে পড়েন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি ক্ষমা চাইতে হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। এরপর ছাত্রছাত্রীদের একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাজভবনে এসে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাবও বিক্ষোভকারীদের দেয় পুলিশ। ঘণ্টাখানেক আটকে থাকার পরও ছাত্রছাত্রীরা পুলিশের আবেদনে সাড়া দেয়নি এরপরই পুলিশ রাজ্যপালের গাড়ি তিন নম্বর গেট দিয়ে দ্রুত বের করে দেয়।

এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে RAF।  এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বাইরে ABVP-র সমর্থকরাও রয়েছেন। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ক্যাম্পাসে, বাইরে রয়েছে RAF-র বিশাল বাহিনী। তারা রাস্তায় টহল দিচ্ছে।