এশিয়ান কাপ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর হল এশিয়া কাপ। ১৯৮৪ সালে এশিয়ার মাত্র তিনটি দল এতে অংশগ্রহণ করে। তবে, প্রায় ৪০ বছর পর টুর্নামেন্ট প্রসারিত হয়েছে এবং আরও তিনটি দল এই ইভেন্টে অংশ নিয়েছে। এবারের আসরে ছয়টি দল হল ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপাল। এশিয়া কাপের ১৩ আসরে মাত্র তিন দল ট্রফি তুলেছে। ভারত রেকর্ড ছয়বার ওয়ানডে এশিয়া কাপ জিতেছে। সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের দিক থেকে ভারতের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া ১২টি দলের মধ্যে দুটি জিতেছে পাকিস্তান। আসর শুরুর আগে দেখে নেওয়া যাক এশিয়া কাপের বিজয়ীদের তালিকা।
১৯৮৪ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের প্রথম আসরের টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
১৯৮৬ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসরের আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার সাথে দুর্বল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কারণে ভারত এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের অনুপস্থিতিতে এশিয়া কাপে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারায় শ্রীলঙ্কা।
১৯৮৮ এশিয়া কাপ
বাংলাদেশ আয়োজিত তৃতীয় আসরে ৪টি দল অংশগ্রহণ করে। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে দু'বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ভারত।
১৯৯০-৯১ এশিয়া কাপ
প্রথমবার এশিয়া কাপ আয়োজন করে ভারত। ভারতের সাথে দুর্বল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কারণে পাকিস্তান এই প্রতিযোগিতায় না খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ এই তিনটি দল এই টুর্নামেন্টে খেলে। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত।
১৯৯৩ এশিয়া কাপ
ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে ১৯৯৩ সালের এশিয়া কাপ বাতিল করতে হয় যা পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
১৯৯৫ এশিয়া কাপ
আরব আমিরাতে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় ছিল ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ভারত ৮ উইকেটে জয়ী হয়।
১৯৯৭ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপ আয়োজন করেছিল শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টের আয়োজক, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। শ্রীলঙ্কা ও ভারত আবার ফাইনাল খেলে এবং দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা।
২০০০ এশিয়া কাপ
দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ। মাত্র একটি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠতে পারেনি ভারত। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩৯ রানে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জেতে পাকিস্তান।
Asia Cup winners so far (ODIs & T20Is)
Who will win ODI Asia Cup 2023❓
📸: CricTracker#AsiaCup2023 #AsiaCup #Cricket pic.twitter.com/k0BMKbv4Ck
— CricStats (@CricStatsINT) August 11, 2023
২০০৪ এশিয়া কাপ
প্রথমবার শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ৬ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দুটি গ্রুপে খেলে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা ফাইনালে ওঠে যেখানে ভারতকে ২৫ রানে পরাজিত করে শ্রীলঙ্কা।
২০০৮ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপ আয়োজন করে পাকিস্তান। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং হংকং এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ফাইনালে ভারতকে ১০০ রানে হারিয়ে মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
২০১০ এশিয়া কাপ
এইবার এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এই চারটি দলই এই আসরে অংশ নেয়। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৮১ রানে হারিয়ে ফের এশিয়া কাপ জেতে ভারত।
২০১২ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ। এশিয়া থেকে কেবলমাত্র টেস্ট খেলা দেশ এই আসরে অংশ নেয়। বোনাস পয়েন্টের কারণে পাকিস্তান এবং আর ভারতের বিপক্ষে ভালো হেড-টু-হেড রেকর্ডের কারণে বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে পাকিস্তান।
২০১৪ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান ঐ সংস্করণে মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জেতে শ্রীলঙ্কা।
২০১৬ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের এই আসরটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এই সংস্করণে অংশ নিয়েছিল। ভারত ও বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠে যেখানে ভারত বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে পরাজিত করে।
২০১৮ এশিয়া কাপ
দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফেরে এশিয়া কাপ। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং হংকং অংশ নেয়। ছয়টি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশ ফাইনাল খেলে যেখানে ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় মেন ইন ব্লু।
২০২২ এশিয়া কাপ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কারণে এশিয়া কাপের আসরটি ২০ ওভারের ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত আবারও ভারত, পাকিস্তান, হংকং, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানকে নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।