চলতি বিশ্বকাপের সবচেয়ে উত্তেজক ম্যাচটা হল শনিবার ধর্মশালায়। অস্ট্রেলিয়ার ৩৮৮ রানের জবাবে নিউ জিল্যান্ড অসাধ্যসাধন করে প্রায় জয় তুলে নিতে যাচ্ছিল। তবে শেষ অবধি শেষ ওভারে মিচেল স্টার্কের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ৫ রানে কিউইদের হারাল অস্ট্রেলিয়া। ধর্মশালা দুই ইনিংস মিলিয়ে উঠল মোট ৭৭১ রান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। কিউই তরুণ প্রতিভাবান ব্যাটার রচিন রবীন্দ্র-র ৮৯ বলে ১১৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসে তাসমিনিয়ার যুদ্ধে বড় কিছু হতে চলেছিল। কিন্তু জয় থেকে ৯৬ রানে দূরে থাকা অবস্থায় কামিন্সের বলে রবীন্দ্র-র আউটের পর মনে হচ্ছিল, এখান থেকে সহজেই জিতবে অজিরা। কারণ তখন কিউইদের জিততে হলে ৫৮ বলে চাই ৯৬ রান, হাতে মাত্র ৪ উইকেট।
কিন্তু সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। ৩৯ বলে ৫৮ রানের নিশামের ইনিংসে প্রায় বাজিমাত করে ফেলছিল নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু ম্য়াচের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ ফাইন লেগে অজি ফিল্ডার মার্নাস লাবুশানে এমনভাবে একটি বাউন্ডারি বাঁচালেন, তাতে বড় ফারাক গড়ে গেল। শেষ অবধি রান আউট হয়ে ফেরেন নিশাম। শেষ বলে জিততে হলে কিউইদের করতে হত ৬ রান। চোট পাওয়া লোকি ফার্গুসন শেষ বলে কিছু করতে পারেননি। দুরন্ত সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে নায়ক প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে নামা অজি ওপেনার ট্রাভিস হেড ( ৬৭ বলে ১০৯ রান)।
ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর চলতি বিশ্বকাপে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন হল অস্ট্রেলিয়ার। ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট পেয়ে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা সেমিফাইনালে ওঠার বড় দাবিদার হয়ে উঠল। এখন বিশ্বকাপ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে তাতে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের শেষ চারে ওঠা উচিত।
শনিবার ধর্মশালায় চির প্রতিদ্বন্দ্বী নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া করে ৩৮৮ রান। শেষের দুটো ওভারে আর একটু রান করতে পারলেই ৪০০ করে ফেলতেন প্যাট কামিন্সরা। চিপকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৬৭, নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ৩৯৯ রানের পর এদিন ধর্মশালায় কামিন্সরা করলেন ৩৮৮। ফলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ওয়ানডে-তে টানা তিনটে ম্যাচে সাড়ে তিনশো রানের বেশী ইনিংস গড়লেন অজিরা।
এদিন অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড রানের পিছনে বড় ভূমিকা নিলেন দুই অজি ওপেনার-ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। চোট সারিয়ে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেমেই সেঞ্চুরি করলেন হেড। হেডের ৬৭ বলে ১০৯ রানের মাথা উঁচু করা ইনিংস না দেখলে বিশ্বাস হওয়ার কথা নয়। ৭টা ওভার বাউন্ডারি, ১০টা বাউন্ডারি হাঁকান হেড। ওয়ার্নার ৬৫ বলে ৮১ রান করেন। ওপেনিং পার্টনারশিপে ওয়ার্নার-হেড ১১৫ বলে ১৭৫ রান যোগ করেন। ২৪ বলে ৪১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আরও পড়ুন-রেকর্ড ১১১টি পদক নিয়ে পঞ্চম স্থানে শেষ ভারতের প্যারা গেমসের সফর
স্মিথ (১৮), লাবুশচানে (১৮)-দের ব্যর্থতা ঢেকে দেন আট নম্বরে নামা অধিনায়ক কামিন্স। ১৪ বলে ৩৭ রান করে দলের রানকে আকাশছোঁয়া জায়গায় নিয়ে যান কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার রানের গতিকে রুখে দেন কিউই অলরাউন্ডার গ্লেন ফিল্পিস। অস্ট্রেলিয়ার রান যখন পুরোপুরি হাতের নাগালে চলে যাচ্ছে, তখন ফিল্পিস ১০ ওভার ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে দলকে দারুণভাবে সাহায্য করেন। ওয়ার্নার, হেড ও স্মিথকে আউট করেন ফিল্পিস।