নরেন্দ্র মোদি ও শরদ পাওয়ার (Photo Credit: PTI)

নতুন দিল্লি, ২০ নভেম্বর: বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর একমাস কেটে গিয়েছে। এখনও কোনও রাজনৈতিক দলই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে পারেনি। বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে গত সপ্তাহের রিপোর্ট করেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। সেখানে সাফ জানানো হয় যে, কোনও রাজনৈতিকদলই সরকার গড়তে পারছে না। এরপর গত ১২ নভেম্বর থেকে মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছে শিবসেনা। তারপরেও শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি জোট করে সরকার গড়তে পারে এনিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত। এই পরিসরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার সারলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar)।

অতিবৃষ্টি ও বন্যায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে মহারাষ্ট্রের কৃষক সমাজ। তাঁদের ঋণ মকুব করে ফের নতুন ঋণের বন্দোবস্ত করুক কেন্দ্র এমনটাই দাবি শরদ পাওয়ারের। তিনি বলেন, চলতি বছরে বার বার অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ডুবেছে মহারাষ্ট্র ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে, কৃষকরা চা, করেও ফসল ঘরে তুলতে পারেননি, লাভ দূরে যাক ঋণ সামলাতে গিয়ে তাঁদের অবস্থা এখন শোচনীয়। মরাঠাওয়াড়া ও বিদর্ভে চাষের ক্ষতির পরিমাণ সব থেকে বেশি। এই মুহূর্তে সরকারি সাহায্য না মিললে কৃষকরা না খেতে পেয়ে মারা যাবে। আগামী মরশুমে ফসলই হবে না। এদিকে রাজ্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকায় কৃষকদের উন্নতিতে কোনও কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী চাইলে দুর্ভাগা কৃষকদের সাহায্য করতে পারেন। তাই রাজ্যের কৃষকদের হয়ে তাঁর কাছে দরবার করতে ছুটে এসেছেন শরদ পাওয়ার। আরও পড়ুন-NRC Will Be Implemented Across Country: দেশজুড়ে এনআরসি হবে, ধর্মের ভিত্তিতে কারও নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না: অমিত শাহ

চিঠি লিখে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের কৃষক দুরবস্থার খবর প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন পাওয়ার। দুটি জেলার ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে চোখে দেখে এসেছেন। তার বিবরণ চিঠিতে লিখেছেন। বাকি জেলার ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিকেশ চলছে, সেকাজ হয়ে গেলেই সমস্ত বিবরণ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। এদিকে এদিনের বৈঠকের পরেই অনেকে বলতে শুরু করেছেন মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়তে চলেছে এনসিপি। সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন শরদ পাওয়ার। পরে সাংবাদিকদের বলেন, মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁরা কোনও আলোচনা করেননি। ২৮৮টি আসনের মধ্যে মহারাষ্ট্রে বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি। কংগ্রেস ৪৪টি আসন, এনসিপি ৫৪টি আসন ও শিবসেনা ৫৬টি আসন। একার পক্ষে কোনও দলেরই সরকার গড়ার ক্ষমতা নেই. ম্যাজিক ফিগার আনতে গেলে বিজেপিকে শুধু যেকোনও একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট করতে হবে। সুযোগ থাকলেও মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ বাঁটোয়ারায় সেই পরিস্থিতি আজ আর নেই।

অন্যদিকে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে এনসিপি ও কংগ্রেসের হাত ধরতে তৎপর শিবসেনা। কিন্তু সেখানেও বিধি বাম, কিছুতই মতাদর্শ বিরোধী দলের সঙ্গে জোটে যেতে রাজি হচ্ছে না কংগ্রেস। এনসিপিও তাই পা বাড়িয়েও সোনিয়ার ইঙ্গিতের অপেক্ষা করছে। সবমিলিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন প্রক্রিয়া এখনও বিশবাঁও জলে।