Nitish Kumar, Atal Bihari Vajpayee, Narendra Modi. (Photo Credits: FB/ Wikimedia Coomons)

পার্থ প্রতিম চন্দ্র: শিবির বদল করায় অঘোষিত পিএইচডি সেরে ফেলছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। কখনও বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, আবার কখনও এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসে কংগ্রেস জোটের মহাগঠবন্ধনের জোটে ঢুকে কুর্সি বাঁচিয়েছেন।কখনও আবার সব কিছু ছেড়ে ফের বিজেপির হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ। দুবার কংগ্রেস- আরজেডি মহাগঠবন্ধনে জোটে যোগ, তারপর বিয়োগের টার্ন, ইউ টার্নের সেই নীতীশ কুমারের কাছে আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে চ্য়ালেঞ্জ ভোটারদের কাছে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা। নীতীশকে বারবার শিবির বদলু হিসেবে কটাক্ষ শুনতে হয়।

কংগ্রেসের জোটে গিয়ে ভুল করেছিলাম: নীতীশ কুমার

বিহারে ভোটের প্রচারের শুরুতেই নীতীশ সাফ করলেন তিনি আর কখনও বিজেপির হাত ছাড়বেন না। অক্টোবরে বিহারে ভোট হওয়ার কথা। তার আগে ফের নীতীশ বিজেপির সঙ্গে জোটসঙ্গ ত্যাগ করতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনা উড়িয়ে জেডি (ইউ) প্রধান তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানালেন, দুবার মহাগঠবন্ধনে (ইন্ডিয়া জোট) যোগ দিয়ে তিনি ভুল করেছিলেন। কিন্তু এমন ভুল তিনি আর কখনও করবেন না। তিনি এবং তার দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কখনও এনডিএ জোট ছাড়া হবে না। এরপর নীতীশ জোর গলায় বলেন, "আমায় মুখ্যমন্ত্রী কে বানিয়েছিল? অটল বিহারী বাজপেয়ী। এটা কী করে ভুলে যেতে পারি যে অটল বিহারী বাজপেয়ী আমায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন।"

বিজেপির হাত আর না ছাড়ার অঙ্গীকার নীতীশ কুমারের

অটল কৃতজ্ঞতা

এ কথা সবারই জানা, নীতীশের সঙ্গে বিজেপির দূরত্বের পিছনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অম্লমধুর সম্পর্কই অনেকটা দায়ি। গুজরাট দাঙ্গার কথা বলে একটা সময় মোদীকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতেন নীতীশ। কিন্তু দেশের রাজনীতির প্রায় শেষ কথা হয়ে ওঠার পর গদি বাঁচাতে সেই মোদীর দ্বারস্থই হতে হয় নীতীশকে। ৭৪ বছরের নীতীশ এবারই হয়তো শেষবার ভোটে লড়বেন। তার আগে তিনি বলে দিলেন, বাজপেয়ীর সঙ্গে কৃতজ্ঞতাতেই তিনি বিজেপির হাত ছাড়বেন না।

কীভাবে নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন বাজপেয়ী

প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে প্রথমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ। অটল বিহারে বাজপেয়ীর উদ্যোগে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে ৭ দিন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সমতা পার্টির প্রধান নীতীশ কুমার। সেই সময় নীতীশ কুমার ও জর্জ ফার্নান্ডেজ সমতা পার্টি গঠন করে ভোটে লড়েছিলেন। সেই ভোটে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি ১২৪, বিজেপি ৬৭, নীতীশ কুমারের সমতা পার্টি ৩৪, কংগ্রেস ২৩ ও জনতা দল (ইউনাইটেড) ২১টি, জেএমএম ১২টি, বিএসপি, ৫ ও বামেরা ১৬টি আসনে জিতেছিল। শেষ পর্যন্ত বাজপেয়ী, আদবাণীর উদ্যোগে বিজেপি ও সমতা পার্টি সরকার গড়েছিল।

সমতা পার্টিকে জেডি (ইউ)-য়ে মিশিয়ে ছিলেন নীতীশ

যে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ভোটে না লড়া সমতা পার্টির প্রধান নীতীশ কুমার। তবে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার ৭দিন পর নীতীশের সরকার আস্থা ভোটে হেরে গিয়েছিল। পরে আরজেডি- নেত্রী তথা লালু পত্নী রাবড়ি দেবী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০০৩ সালে নীতীশের সমতা পার্টি মিশে গিয়েছিল জনতা দল ইউনাটইডে। এরপর ২০০৫ নির্বাচনে জিতে টানা ৮ বছর বিজেপির সমর্থনে জনতা দল ইউনাইটেডের বিধায়ক হয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। বাজপেয়ীর আশীর্বাদেই বিহার তথা দেশের রাজনীতি নীতীশের এত বড় উত্থান।