কলকাতা, ৯ মার্চ: পূর্ব রেলের স্ট্র্যান্ড রোডে রেলের কয়লাঘাটা ভবনে সোমবার সন্ধ্যা ছটা বেজে ১০ মিনিটে বিধ্বংসী আগুন (Strand Road Fire) লাগে। এই আগুনে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত ১৪ তলা ভবনের ১৩ ও ১২ তলা। এই ১৩ তলাতেই এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিল তারের গোছা, ফলস সিলিং, প্লাইউডের কিউবিকল। এর জেরেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে রেলভবনের ১২ তলায় ছিল সার্ভার রুম। আগুনের লেলিহান শিখা গোটা সার্ভার রুম গ্রাস করে নেওয়ায় পূর্ব রেলের টিকিট বুকিং পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। জানা গিয়েছে, এই সার্ভারের মাধ্যমেই পূর্ব রেলের টিকিট বুকিং সিস্টেম কাজ করে। ফলে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে কার্যত বসে যায় টিকিট বুকিং ব্যবস্থা। টিকিট বুকিং-এ সমস্যা দেখা দেয় দক্ষিণ পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব রেলেও। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
নিছক দুর্ঘটনার জেরে এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড না কি এর নেপথ্যে কোনও অন্তর্ঘাত রয়েছে তা জানতে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করবে রেল। রেলের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এই তদন্ত কমিটিতে থাকবেন রেলেরই চার উচ্চপদস্থ কর্তা। এই তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে থাকবেন রেলের মুখ্য নিরাপত্তা অফিসার জয়দীপ গুপ্তা। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাতে গিয়েছিলেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের পাশাপাশি তিনি বলেছেন, “রাজ্য সরকার যদি তদন্ত শুরু করে, তাহলে রেলের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে।” এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে যাত্রী সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি যাত্রী সংরক্ষণ সম্পর্কিত তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আরও পড়ুন-Bihar: ৪ বছর আগে পণের জন্য স্বামীর হাতে খুন হওয়া গৃহবধূ ফিরলেন বাড়িতে
উল্লেখ্য, অগ্নিকাণ্ডের সময় দুটি লিফট চালু ছিল। তাতেই আটকে পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। লিফটের দরজা খুলতেই ঝলসে মৃত্যু হয় তাঁদের। এদিকে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর দাবি, বিপদের সময় কাজ করেনি অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র। এমনকী অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত ছিল না বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করলেও, তা খারিজ করে দিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী। তবে এই বিল্ডিংয়ের ম্যাপ দিতে না পারার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রেলের ওই কর্তা।