শ্রীনগর, ২৫ অগাস্ট: সংবিধানের ৩৭০ ধারাকে কেন্দ্র করে ভূ স্বর্গে বিধিনিষেধের জেরে কাশ্মীরের স্বাস্যব্যবস্থা সহ সাধারণ মানুষের জীবনধারনের প্রাথমিক জিনিস মিলছে না। কাশ্মীরে নিউজ ১৮-র প্রতিনিধি জানালেন, কাশ্মীরের গ্রামীন এলাকায় জীবনদায়ী ওষুধ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। মুমূর্ষ রোগীরা মারা যাচ্ছেন বলেও দাবি। ১৪৪ ধারা সহ নানা বিধিনিষেধ জারি থাকার ফলে সাধারণ মানুষের সামান্য চাহিদাও পূরণ হচ্ছে না বলে নিউজ ১৮-র প্রতিনিধির রিপোর্টে প্রকাশ।
১৪৪ ধারা জারি করার গোড়ার দিকে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের দাবি ছিল অন্তত দু মাসের খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান রয়েছে ভূ স্বর্গে। তবে কাশ্মীরের বেশ কিছু জায়গায় সেসব পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি। যদিও প্রশাসন এমন খবর উড়িয়ে দিয়েছে। আরও পড়ুন-অরুণ জেটলি-র মৃত্যুর শোকে আবেগে ভেসে নরেন্দ্র মোদি বললেন, 'বন্ধুর মৃত্যুতে গভীর ব্যথা পেয়েছি'
সংবাদসংস্থা ANI-র টুইটের মাধ্যমে জানা যায়, জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন জানিয়েছে শ্রীনগরে ১৬৬৬টি ওষুধের দোকানের মধ্যে ১১৬৫টি খোলা রয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকায় ৭৬৩০টি খুচরো ওষুধের দোকান এবং ৪৩৩১টি পাইকারি ওষুধের দোকান খোলা। মানে সব মিলিয়ে ভূ স্বর্গে ৬৫ শতাংশ ওষুধের দোকান খোলা। কিন্তু প্রশাসনের এই দাবির উল্টো ছবি হল, ওষুধের দোকান খোলা থাকলেও সেখানে জীবনদায়ী ওষুধের সাপ্লাই নেই। ৫ অগাস্টের পর থেকে কাশ্মীরের নানা জায়গায় কোনও রকম জীবনদায়ী ওষুধের সাপ্লাই হয়নি বলে রিপোর্টে প্রকাশ।
৫ অগাস্ট থেকে অবরুদ্ধ জম্মু-কাশ্মীর। সেই রিপোর্টে প্রকাশ, সমস্ত দোকান, ব্যবসায়ীক কাজকর্ম, সব বাজার বন্ধ থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের হাতে আসছে না। বেশ কিছু জায়গায় যানচলাচলও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে দাবি।
এই নিউজ রিপোর্টে সাজিদ আলি নামের কাশ্মীরের এক মানুষের কথা বলা হয়েছে। যিনি ডায়বেটিসে ভোগা তাঁর বৃদ্ধ মায়ের জন্য জীবনদায়ী ওষুধের জন্য একের পর এক ওষুধের দোকানে চক্কর কেটেও কিছুই পাননি। অথচ মায়ের জীবনদায়ী ওষুধ আর মাত্র দু দিন আছে। শ্রীনগরে তিন ঘণ্টা মায়ের ওষুধ না পেয়ে সোজা বিমান ধরে দিল্লি থেকে ওষুধ নিয়ে আসেন সাজিদ। সেই রিপোর্টে ব্যবসায়ী সাজিদ হতাশ হয়ে বলেন, ''আর্থিক সঙ্গত থাকায় আমি দিল্লি উড়ে গিয়ে ওষুধ কিনতে পেরেছেন, কিন্তু যারা গরীব তাদের কী হবে।
উরি অঞ্চলে ওষুধের দোকানের এক কর্মচারী জানালেন, দোকান খোলা থাকছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের স্টক প্রায় শেষ। অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া জীবনদায়ী প্রায় কোনও ওষুধই নেই। ৫ অগাস্টের পর থেকে আমরা নতুন কোনও সাপ্লাই পাইনি।" নামলা গ্রামের এক বাসিন্দা ক্ষোভের সুরে জানালেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমার বাবার জন্য ইনুসুলিনের জন্য মরিয়া হয়ে খুঁজছি। কিন্তু সব জায়গা থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জানি না কী করব।"