দেখতে দেখতে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার (Bhopal Gas Tragedy) ৩৬ বছর হয়ে গেল। যে দুর্ঘটনা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শিল্প বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ১৯৮৪ সালে ২ ও ৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড পেস্টিসাইড প্ল্যান্ট থেকে আচমকাই গ্যাস লিক হতে শুরু করে। এই ঘটনা সেদিন ১৫ হাজারেরও বেশি প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। এই গ্যাস লিকের অভিঘাতে প্রায় হাজার বাসিন্দা সারা জীবনের জন্য শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যান। প্রায় শতাধিক সদ্যোজাত জন্মগতভাবে শারীরিক ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখে। সেদিন রাতে ভোপালের ওই পেস্টিসাইট প্ল্যান্ট থেকে ৪০ টনেরও বেশি মিথায়িল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক হয়েছিল।
এই ঘটনায় প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ৩ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর দিন যত এগিয়েছে গ্যাস লিকের প্রভাবে হাজার হাজার মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছে। ১৯৮৪-র ২ ডিসেম্বর ঘড়িতে তখন রাত ১১টা ভোপালের প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দা নিশ্চিন্তে ঘুমের দেশে। সেই সময় ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড পেস্টিসাইড প্ল্যান্টের এক অপারেটর লক্ষ্য করেন মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাসে ভর্তি একটি স্টোরেজ ট্যাঙ্কে ছোট্টো লিক রয়েছে। এবং সেই লিক থেকে গ্যাস বেরনো শুরু হয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে গ্যাসের অভ্যন্তরীণ প্রেশারে ওই ট্যাঙ্কটি ফেটে যেতে পারে। তবে সেখানে লাগানো একটা নোটিসে এমআইসি সিস্টেম থেকে গ্যাস লিক হলেও সেফটি ডিভাইসের কারণে সেই গ্যাসের ক্ষতিকারক পদার্থকে নিউট্রালাইজ করা হয়েছে। এবং ওই দুর্ঘটনার রাতে তিন সপ্তাহ আগেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্পষ্টতই একটি খারাপ ভালভের সাহায্যেই ওই ৪০ টন মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাসের সঙ্গে জল মেশানোর অনুমতি দেওয়া হয়। গ্যাস বাতাসে মেশার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভোপালের রাস্তা ভরে ওঠে পশুপাখি-সহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃতদেহ। এদিক সেদিকে দেখা যায়, পড়ে আছে মানুষের মরদেহ।আরও পড়ুন-Election Campaigning: 'বঙ্গ জননী' বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে 'উঠেছে আওয়াজ বঙ্গে, মহিলারা দিদির সঙ্গে' স্লোগানে প্রচারে নামবেন মুখ্যমন্ত্রী
কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় হাসপাতালে আহত রোগীর ভিড় হু হু করে বাড়তে থাকে। এই বিয়োগান্তক ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম রাসায়নিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। এবং ভোপাল শহর হয়ে ওঠে শিল্প বিপর্যয়ের অন্য নাম।