কোকু ইস্তাম্বুলোয়া, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত নারী হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি।তবে ১২৯ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান হয়। রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে ওই মহিলার শনাক্তকরণ নথিতে বলা হয়েছে যে তিনি ১৮৮৯ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলে। গত ২৭ জানুয়ারী কোকু ইস্তাম্বুলোয়াকে তার জন্মস্থান ব্রাটস্কয় গ্রামে সমাধিস্থ করা হয়েছিল, সংবাদ সংস্থা TASS তাঁর এক নাতি, ইলিয়াস আবুবাকারভকে উদ্ধৃত করে এই খবরটি বলেছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ পাসপোর্টে জন্মের বছরটি যদি সঠিক হয়, তবে ইস্তাম্বুলোভা মারা যাওয়ার সময় তাঁর বয়স ১২৯ বা ১৩০ বছর ছিল। যা তাকে বিশ্বব্যাপী রেকর্ডে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি বানিয়েছে। তার বয়সের অন্য কোন নির্দিষ্ট প্রমাণ উদ্ধৃত করা হয়নি। ২০০৩ সালে দেওয়া পাসপোর্টে শুধুমাত্র সালের উল্লেখ ছিল, জন্মের মাস বা দিন উল্লেখ ছিল না, তবে তিনি বলেছিলেন যে তার জন্ম ১ জুন।
সংবাদ সংস্থা TASS-এর মতে, ৩১ জানুয়ারি বৃদ্ধার নাতি আবুবাকারভ বলেন, "মূলত কোকুর স্বাস্থ্য ভালো ছিল, শুধুমাত্র কিছু রক্তচাপের সমস্যা ছিল।আমরা একজন ডাক্তারকে ডেকেছিলাম, যিনি তাকে একটি ইনজেকশন দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সুস্থ হননি"
ইস্তাম্বুলোয়া ছয় সন্তান মারা গেলেও তিনি বেঁচে ছিলেন এতদিন। ২০১৮ সালে আরএফই/আরএল-এর সাথে কথা বলার সময়, ইস্তাম্বুলোভা বলেছিলেন যে ১৯৪৪ সালে সোভিয়েত স্বৈরশাসক জোসেফ স্ট্যালিনের সরকার চেচেনদের মধ্য এশিয়ার স্টেপে অভ্যন্তরীণ নির্বাসনে পাঠালে দুই ছেলে সহ তার বেশ কয়েকজন আত্মীয় মারা যায়।
গত বছর সম্প্রচারিত একটি ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্রে তিনি ৭৫ বছর আগে স্টালিনের দ্বারা তার স্থানীয় চেচেন জনগণকে কাজাখস্তানের সোপানে নির্বাসিত করার সেই ভয়ঙ্কর দিনটির কথা আবেগপূর্ণভাবে বলেছিলেন।যেখানে তিনি বলেছিলেন যে কীভাবে গরু নিয়ে যাওয়ার গাড়িতে করে মানুষদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং সেখানে মারা যাওয়ার পর ট্রেনের মধ্যে থাকা মৃতদেহগুলিকে ক্ষুধার্ত কুকুরদের খাওয়ার জন্য গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।যদি তার বয়স সঠিক হয়, তখন কোকুর বয়স ছিল ৫৪।
তিনি তাঁর স্মৃতি চারণায় ১৯৪৪ সালের ফেব্রুয়ারির সকালের কথা বলেছিলেন যখন সমগ্র জাতিকে ট্রান্স-কসাকাসে তাদের পাহাড়ি মাতৃভূমি থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন- এটি একটি খারাপ দিন ছিল, ঠান্ডা এবং বিষণ্ণ,' 'আমাদের ট্রেনে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল... কেউ জানত না কোথায়। রেলওয়ের গাড়িগুলো মানুষে ঠাসা-ঠাসা ময়লা, আবর্জনা, মলমূত্র।'
স্ট্যালিনের তার স্থানীয় চেচেন ভাষায় সাংবাদিকদের দৃঢ়তার সাথে বলেছিলেন: 'লিখুন - গাড়িতে মলমূত্র ছিল। আমাদের বন্দী করে রাখা হয়েছিল,'আমাদের কোথাও যেতে দেওয়া হয়নি।ভিড়ের ট্রেনে দুর্গন্ধযুক্ত ভিড়ের মধ্যে টয়লেটে যেতে লজ্জা পাচ্ছিল অল্পবয়সী ককেশাস মেয়েরা। প্রস্রাব চেপে রেখে তাদের মূত্রাশয় ফেটে যাওয়ার কারণে মারা গিয়েছিল তারা ।
'World's Oldest Person' Dies: Russian Woman Koku Istambulova, Who Survived Stalin's Repressions, Passes Away at 129#WorldsOldestWoman #KokuIstambulova #Russia #Stalin #Russian #SovietUnion https://t.co/Y4zu8aDfkb
— LatestLY (@latestly) September 15, 2023