ইয়াঙ্গন, ১ ফেব্রুয়ারি: মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান (Myanmar State Emergency)। স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সু কি-সহ দেশের সমস্ত প্রথম সারির নেতাদের বন্দি করে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করল সেদেশের সেনা। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে। দেশের প্রেসিডেন্ট উই উইন মিন্তকেও আটক করেছে সেনা। মায়ানমারের প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শোনা গিয়েছে এই ভিভিআইপিদের আটক করে কোনও এক অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়েছেন সেনাবাহিনী। আগামী ১ বছরের জন্য দেশের দখল নেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়াওয়াদি টিভি। এর আগে, ১৯৬২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত, প্রায় পাঁচ দশক মায়ানমারে সেনা শাসন কার্যকর ছিল। আরও পড়ুন-Union Budget 2021 Live: ৭৫ বছরের বেশি প্রবীণদের আয়করে সম্পূর্ণ ছাড়, দিতে হবে না সুদ;বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী
এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-র মুখপাত্র নমিয়ো ন্যুন্ত বলেন, “দেশের মানুষকে বলব, উত্তেজনার বশে কিছু ঘটিয়ে ফেলবেন না। আইন মেনে চলুন।” বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে জো বিডেনের সরকার। সু চি-সহ সব রাজনীতিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে বলে মায়ানমার সেনার কাছে দাবি জানিয়েছে তারা। অন্যথায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে মায়ানমার সংসদের ২৫ শতাংশ আসনই সেনার জন্য সংরক্ষিত। সু চির সরকারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্বও সংরক্ষিত তাদের জন্য। কিন্তু সে দেশের সেনা নাগরিক আইন মেনে চলে না বলে অভিযোগ করেছেন এশিয়া অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ফর হিউম্যান রাইটস-এর অধিকর্তা জন সিফটন। এনিয়ে হোয়াইট হাউস মুখপাত্র জেন সাকি একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল বদল অথবা মায়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা বরদাস্ত করবে না আমেরিকা। সংযত না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দেশের নেত্রী নির্বাচিত হন নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী সু কি। তার আগে দীর্ঘ দেড় দশক তাঁর বন্দিদশায় কেটে গেছে। তবে ক্ষমতায় আসীনের সঙ্গে সঙ্গে দেশের পশ্চিমে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং গণহত্যার অভিযোগে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক মহলে সু কি-র ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও দেশীয় রাজনীতিতে আগের মতোই জনপ্রিয়তা ছিল তাঁর। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ ঘিরে সম্প্রতি আঙুল উঠতে শুরু করে তাঁর দিকে। দেশের নির্বাচন কমিশন যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এই ডামাডোলের মধ্যে শনিবার সেদেশের সেনা ঘোষণা করে সংবিধান ও আইন রক্ষার দায়িত্ব সেনার হাতে। এমন ঘোষণার পরেই সেনা অভ্যুত্থানের একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষমেশ তাই ঘটল।