কলকাতা, ৯ মার্চ: সোমবার সন্ধ্যা ছটা বেজে দশ মনিটে আগুন লাগে পূর্ব রেলের সদর কার্যলায় নিউ কয়লাঘাটা বিল্ডিংয়ে (Strand Road Fire)। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ইতিমধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয়ে গেছে রেলভবনের ১২ ও ১৩ তলা। ১২ তলাতে ছিল সার্ভার রুম। সেখানে ছাই ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তাই পূর্ব রেলের টিকিট বুকিং পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এমন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ফের ফিরল পিচ বোর্ডের টিকিট। কলকাতা-সহ শহরতলির সমস্ত স্টেশন থেকেই আজ যাঁরা টিকিট কেটেছেন। তাঁরা প্রায় এক ধাক্কায় ফিরে গিয়েছেন আজ থেকে বারো বছর আগের সময়কালে। হ্যাঁ হাতে পিচবোর্ডের সেই ব্রাউন টিকিট। উপরে কালির ছাপে লেখা গন্তব্যের নাম। আরও পড়ুন-Strand Road Fire: বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত সার্ভার রুম, বিপর্যস্ত পূর্বরেলের টিকিট বুকিং পরিষেবা
জেনারেশন ওয়াই এই টিকিট দেখে ভুরু কোঁচকালেও বাকিরা কিন্তু শত ব্যস্ততার মধ্যেও নস্টালজিক হয়ে পড়েছেন। আগুনের গ্রাসে কম্পিউটার নয় ভরসা জোগাচ্ছে এই পিচ বোর্ডের টিকিট। প্রথমে কাউন্টারের লাইন যখন অফিস টাইমে দীর্ঘ হচ্ছে, তখন মাথায় আগুন জ্বললেও পরে বিষয়টি জানতে পেরে সকলেই বেশ উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে রেল টিকিট নিয়ে যে সমস্যায় পড়তে হবে তা বলাই বাহুল্য। সোমবার রাত থেকেই পূর্ব রেলের অনলাইন টিকিট বুকিং পরিষেবা পুরোপুরি বিকল হয়ে গিয়েছে। আপাতত বন্ধ রয়েছে পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের টিকিট বুকিং। এমতাবস্থায় সেকেন্দ্রাবাদের সার্ভারের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে রেল সূত্রে খবর। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় দুটি লিফট চালু ছিল। তাতেই আটকে পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। লিফটের দরজা খুলতেই ঝলসে মৃত্যু হয় তাঁদের। এদিকে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর দাবি, বিপদের সময় কাজ করেনি অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র। এমনকী অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত ছিল না বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করলেও, তা খারিজ করে দিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী। তবে এই বিল্ডিংয়ের ম্যাপ দিতে না পারার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রেলের ওই কর্তা।