কলকাতা, ২৮ ফেব্রুয়ারি: চোখে ভালো দেখতে পান না। রক্তচাপের (Blood Pressure) সমস্যা রয়েছে। এর আগে কোনও দিন বিমানেও চড়েননি বছর বিরাশির বিলকিস। শাহিন বাগের ‘দাদি’। কিন্তু এ নিয়েই অশীতিপর মহিলা চষে ফেলছেন গত তিন দিনে পরপর তিনটি শহর! দেশের নানা প্রান্তে শুরু হওয়া সিএএ, এনআরসি, এনপিআর-বিরোধী আন্দোলনে উৎসাহ দিতে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি। সঙ্গী অবশ্য রয়েছেন কয়েকজন। তবে তাঁরা সকলেই যুবক-যুবতী। চলতি সপ্তাহের বুধবার ‘দাদি’ পৌঁছেছেন কলকাতায়। আজ শুক্রবার কলকাতার শাহিন বাগ আন্দোলনস্থলে (পার্ক সার্কাস) তাঁরযাওয়ার কথা (Shaheen Bagh Agitators Will Join Park Street Agitation In Kolkata)।
স্বামী মারা গিয়েছেন ১১ বছর আগে। পাঁচ পুত্র, পুত্রবধূ, ১৯ জন নাতি-নাতনির সংসার ছেড়ে গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে বিলকিসের ঘর এখন শাহিন বাগ (Shaheen Bagh)। বিমানে ওঠার সময়ে সঙ্গীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘অসুবিধা হবে না তো? এতক্ষণ বসতে পারবেন?’’ আনন্দবাজার পত্রিকার খবর অনুযায়ী কথাটা শুনে মাথার ঘোমটা আরও একটু ভালো করে টেনে নিয়ে জোরালো গলায় বৃদ্ধা বলেছিলেন, ‘‘গত ৭০ দিন ধরে তো শাহিন বাগেই বসে থাকলাম। বিমানে (Plane) বসতে অসুবিধা কোথায়? ঠিক তো করেই নিয়েছিলাম, হয় মৃত্যুর পরে শাহিন বাগ থেকে উঠব, নয়তো দাবি পূরণ হওয়ার পরে।’’ এই সফরে বৃদ্ধার সঙ্গী শাহিন বাগের আন্দোলনকারী সোনু ওয়ারসি, সৈয়দ জাওয়াদ। পরে রয়েছেন নির্দিষ্ট পোশাক। তাতে লেখা, ‘শহরে শহরে শাহিন বাগ!’ তাঁদেরই একজনের কথা অনুযায়ী, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ২৩ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। তত দিন প্রাণপণ আন্দোলন চলবে। তার পরে যা রায় দেবে, মেনে নেব। কিন্তু শাহিন বাগ তুলে দিলেও সারা দেশে এর প্রভাব থেকে যাবে। ৭০ দিনের আন্দোলন আগামী ৭০ বছর দেশের রাজনীতিতে দিশা দেখাবে।’’ আরও পড়ুন: COVID-19 Impact On Global Economy: করোনার থাবায় এবার শেয়ার বাজার, ১০০০ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স
শোনা যাচ্ছিল, শাহিন বাগের আন্দোলনকারীরা নাকি সমঝোতা করতে চান! প্রশ্নে শামসাদ বিবি বললেন, ‘‘কত ভাবে যে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়েছে! তুমি ঘরে শুয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ করছ, আর আমরা ঠান্ডায় বসে আছি, রোদে পুড়ছি! আমাদের কি বসে থাকার শখ রয়েছে?’’ শামসাদকে চুপ করিয়ে ‘দাদি’র জবাব, ‘‘এত কথা কীসের! শাহিন বাগে গুলি চলেছে, ছেলেরা বোরখা (Burqa) পরে এসে ঝামেলা করেছে। কিন্তু আমরা কিছুরই পরোয়া করি না।’’