Coronavirus in West Bengal: তেহট্টের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে ট্রেন সফর, আইসোলেশনে CRPF-র মহিলা কনস্টেবল
(Photo Credits: IANS)

কলকাতা, ২৯ মার্চ: নদিয়ার তেহট্টে (Tehatta) একই পরিবারের ৫ জন করোনাভাইরাসে (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিবারের সংস্পর্শে এসেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক মহিলা সিআরপিএফ (CRPF) কনস্টেবল ও মজুর। কেউ প্রত্যক্ষভাবে, কেউ পরোক্ষে। তাই নিজেই সচেতন হয়ে হাসপাতালে আইসোলেশনে গেছেন কাটোয়ার বাসিন্দা ওই মহিলা কনস্টেবল। আর এখনও পর্যন্ত ওই জনমজুরের কোনও হদিশ নেই। কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন তাঁকে খুঁজছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তেহট্টের বল্লভপাড়া ও কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ ফেরি পরিষেবাও।

সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার রাতে নদিয়ার তেহট্টের এক পরিবারের ৫ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তাঁরা কয়েকদিন আগে দিল্লি গেছিলেন একটি বিয়েবাড়িতে। সেখানে লন্ডন ফেরত এক যুবকের সংস্পর্শে আসেন। লন্ডন ফেরত ওই যুবক তখনই COVID-19 আক্রান্ত ছিলেন। বিয়েবাড়ির পর সেখানকার সবাইকে কোয়ারান্টাইনে পাঠায় দিল্লি প্রশাসন। তবে তেহট্টের ওই পরিবার এক শিশু ও দুই কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। ১৯ মার্চ নিউ দিল্লি-শিয়ালদা রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন তাঁরা। ২০ মার্চ সাড়ে দশটা নাগাদ শিয়ালদা পৌঁছান। সেখান থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে যান বেথুয়াডহরী। স্টেশন থেকে অটোয় তেহট্টে, নিজেদের বাড়ি। শিয়ালদা থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে এই করোনা আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গী ছিলেন কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সিআরপিএফের ২৩ বছরের মহিলা কনস্টেবল। তিনি একই ট্রেনে যাচ্ছিলেন তেহট্টে, এক আত্মীয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে। ওই পরিবারের পাশের আসনেই ছিলেন তিনি। ৬ মাসের শিশুটিকে কোলে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আদরও করেছেন, অন্যদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেছেন। আরও পড়ুন: Coronavirus in India: করোনার কবলে বিএসএফ, সিআইএসএফ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সেনা

একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ট্রেনে সফর করার পর তিনি নিজেই তেহট্টে পৌঁছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। সব স্বাভাবিকই ছিল। কারণ, তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে ওই পরিবারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এই লেডি কনস্টেবলের সবটা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে, তিনি ওই পরিবারের সঙ্গেই তো তেহট্টে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে যান। তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়।

এদিকে কেতুগ্রামের বাসিন্দা এক জনমজুর কাজের জন্য যান তেহট্টের কৃষ্ণপুর গ্রামে। কয়েকদিন ওই বাড়িতে থেকে তিনি কাজ করেন। কিন্তু তেহট্টে করোনা আক্রান্তদের খবরটি জানাজানি হতে তিনি ভয় পেয়ে যান। শনিবার রাতে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে বল্লভপাড়া ফেরিঘাট হয়ে ফেরার হন। এখনও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁর খবর পেয়ে কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন কেতুগ্রাম পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছে এই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার। কাটোয়ার এই দু’জন করোনা আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে আসার খবর পেয়ে সচেতন হয়েছে কাটোয়া পৌরসভাও। পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়া জেলা সংযোগকারী অন্যতম ব্যবস্থা জলপথ পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ এবং তেহট্টের বল্লভপাড়ার মধ্যে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা। জরুরি প্রয়োজনেই মিলবে পরিষেবা।