দরজায় কড়া নাড়ছে পুজো। পাড়ায় পাড়ায় সেজে উঠছে মন্ডপ। কোথাও থিম পুজোর ভিড় তো কোথাও সনাতনী রূপেই মায়ের আরাধনা। তবে সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় এখনও রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ ঢাকের বাদ্যি বেজে ওঠার আগে  এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বনেদী বাড়ির (Bonedi Barir Pujo) পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে এসেছে লেটেস্টলি বাংলা (LatestLY Bangla)

মহিষাদলের কাঁকুড়দার মাইতি বাড়ির দুর্গাপূজো

সেই জমিদারী আর নেই, তবু স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে মহিষাদলের কাঁকুড়দার মাইতি বাড়ির দুর্গাপূজো। এক সময় মুগবেড়িয়ার নন্দ পরিবারের অধীনে কাঁকুরদার মাইতিদের জমিদারী ছিল। সেসময়ই মাইতি পরিবারের তৎকালীন পূর্ব পুরুষ বেচারাম মাইতি তিনি মা দুর্গার স্বপ্নাদেশে খড়ের চালায় দুর্গা পুজোর সূচনা করেছিলেন। প্রথমত বহু বছর ধরে ঘট পূজার মাধ্যমে দুর্গার আরাধনা চলত। পরে গ্রামবাসীদের পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার কোন জায়গা ছিল না বলেই মূর্তি পূজার মাধ্যমে গ্রামবাসীরা পুষ্পাঞ্জলী দিতে পারেন মায়ের কাছে সেই লক্ষ্যে শুরু হয় মূর্তি পূজা। যেহেতু চাষি নিয়ে এই জমিদারি চলত তাই খড়ের চালার মধ্য দিয়ে মন্ডপ তৈরি করা প্রথা এখনো রয়েছে। মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর ১১ বছর পরে এই মাইতিবাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়। তাও প্রায় দুশো ত্রিশ বছরের পুরানো পুজো।

শোনা যায় আনুমানিক বাংলা ১২২৯ সনে বেচারাম মাইতির হাত ধরে এই পুজোর সূচনা হয়।মাইতি পরিবারের বর্তমান সদস্যদের থেকে জানা যায় সম্পূর্ণ বৈষ্ণব মতে এখানকার পুজো হয়ে আসছে। তাই এই পুজো মন্ডপে কোনও বলি দেওয়ার প্রথা নেই। সন্ধীপুজো শুরু হয় মহিষাদল রাজবাড়ির তোপের আওয়াজে। এই পুজো দূর দূরান্তের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে বলেই দাবী তাদের। অষ্টমীতে মহাপূজা। নবমীতে কুমারী পুজো, বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই পরিবারের পুজোয়। প্রত্যন্ত এলাকায় এই কুমারী পুজো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে। খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এদিন সকল দর্শনার্থীদের এই প্রসাদ খাওয়ানো হয়।

পরিবারের শতাধিক সদস্য, কর্মসূত্রে জেলার বাইরে থাকলেও পুজোর কটা দিন সকলে একত্রিত হয়ে পুজোতে মেতে উঠেন। সিন্দুর খেলা এই পুজোতে একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে গ্রামের সকল মহিলারা বিসর্জন এর আগে সিঁদুর খেলায় মহাসমারোহে মেতে ওঠেন।