Puja Image (photo Credit: Pixabay)

৩ এপ্রিল অশোক ষষ্ঠী (Ashok Sasthi 2025)। সন্তানের মঙ্গল কামনায় মায়েরা এই অশোক ষষ্ঠী পালন করেন। সন্তান যাতে ভাল থাকে, সুস্থ থাকে, তার জন্যই অশোক ষষ্ঠী পালন করে মায়েদের এই মঙ্গল কামনা পর্ব শুরু এবং শেষ হয়। প্রত্যেক বছর চৈত্র মাসে এই অশোক ষষ্ঠী পালন করা হয়। যেখানে অশোক ফুলের কুড়ি এবং সবুজ কলাই অর্থাৎ মুগ কলাই খেয়ে এই ষষ্ঠীর ব্রত পালন করেন মায়েরা।

কীভাবে এই অশোক ফুলের কুড়ি খাওয়া হয়

৬টি অশোক ফুলের কুড়ি, ৬টি মুগ কলাই নিয়ে কাঁচা দুধ অথবা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে এই ষষ্ঠীতে খাওয়া হয়। দাঁতে না লাগিয়ে এই অশোক ফুলের কুড়ি, মুগ কলাইয়ের সঙ্গে কাঁচা দুধ অথবা দই মিশিয়ে খেতে হয়। এরপর মায়ের পড়েন ব্রত কথা।

রাজা দুষ্মন্ত এবং শকুন্তলার গল্পে আবদ্ধ অশোক ষষ্ঠী 

কথিত আছে, রাজা দুষ্মন্ত যখন শকুন্তলাকে বিয়ে করেন, অন্য রানিরা তাঁদের সেই সুখ ভাল চোখে দেখেননি। তাই প্রত্যেকবার যখন শকুন্তলা সন্তানের জন্ম দিতেন, অন্য রানিরা তাঁকে জানাতেন তিনি কাঠের ঘোড়ার জন্ম দিয়েছেন। শকুন্তলার গর্ভ থেকে কাঠের ঘোড়া বেরিয়েছে শুনে রেগে যেতে শুরু করেন রাজা দুষ্মন্ত। অন্যদিকে রাজার অন্য রানিরা শকুন্তলার সদ্যোজাত সন্তানদের নিয়ে নদীর জলে ভাসিয়ে আসতেন। এই করে সময় বয়ে যেতে শুরু করে। রাজা দুষ্মন্ত এরপর বিরক্ত হয়ে, ক্ষোভে, রাগে শকুন্তলাকে বনবাসী করার উদ্যোগ নেন। রাজা যখন শকুন্তলাকে মুনি আশ্রমে ছাড়তে যান, সেই সময় রানি অশোক ফুলের কুড়ি রাস্তায় ছড়াতে ছড়াতে যান। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যদি কখনও আশ্রম থেকে দুষ্মন্তর কাছে ফিরতে হয়, ওই অশোক বন ধরে তিনি ফিরবেন, এই আশাতেই শকুন্তলার অশোক ফুলের গাছের বীজ বপন। রাজার কাছে ফেরার আশায় শকুন্তলা অশোক বন তৈরি করেছিলেন কুড়ি ফেলে। এরপর রাজা একদিন শকুন্তলার খোঁজ পান, তাঁর হারিয়ে যাওয়া সন্তানদেরও খোঁজ পান ওই অশোক বনের পথ ধরে। সেই থেকে অশোক ষষ্ঠীর প্রচলন।

কী খাওয়া যায় এই ষষ্ঠীতে

ফল, সাবু, দই, লুচি, পরোটা খেতে হয় এই অশোক ষষ্ঠীতে। অর্থাৎ ধান, চালের খাবার খাওয়া যায় না। ধান, চালের খাবার অর্থাৎ ভাত, চিড়ে, মুড়ি কোনও কিছুই এই ষষ্ঠীতে মায়েরা খেতে পারেন না।