বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন, ১ বৈশাখ, বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং আনন্দের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি কেবল একটি ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টানোর মুহূর্ত নয়, বরং বাঙালির হৃদয়ে এক নতুন সূর্যোদয়ের প্রতীক। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী সমস্ত বাঙালি এই দিনটিকে শুভ দিন হিসেবে মানেন।

বাংলা নববর্ষের সূচনা মুগল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে তিনি বাংলা সনের প্রবর্তন করেন, যা পরে বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। ১ বৈশাখ মূলত ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন খাতা (হালখাতা) খোলার দিন, যেখানে তারা পুরোনো হিসাব মিটিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু করেন। দেবী লক্ষ্মী এবং ভগবান গণেশের পুজো করে। পয়লা বৈশাখের দিনে বাংলার অনেক জায়গায় গো পুজোও পালিত হয়।

তবে এর গুরুত্ব শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, বরং এটি বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতীক। এবছর পয়লা বৈশাখ ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে। এই দিন সকলে একে অপরকে শুভ নববর্ষ বলে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায়। ১৪৩২ সালের এই দিনে বাংলা ক্যালেন্ডার শুরু হবে।

প্রতিবছর ১ বৈশাখ এলে সারা দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। সকালে পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মানুষ, পান্তা-ইলিশের আয়োজন, আর লোকগানের সুর—এসব মিলিয়েই দিনটি হয়ে ওঠে রঙিন।  পশ্চিমবঙ্গ সহ যেখানে যেখানে বাঙালি, সেখানেই বৈশাখী উৎসব আনন্দে মুখরিত হয়।

১ বৈশাখ শুধুমাত্র আনন্দের দিন নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষারও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই দিনে বাঙালিরা নতুন উদ্যমে নিজেদের শেকড়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন স্বপ্ন দেখে। এই দিনটি শুধুমাত্র একটি বর্ষপঞ্জির পরিবর্তন নয়, বরং নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা এবং নতুন পথচলার অঙ্গীকার।