কলকাতা, ৮ জানুয়ারি: তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বনধের সংস্কৃতিকে অতীত করে দিয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে বুধবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ভারত বনধ। এই বনধের জেরে সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটনার ঘনঘটা। হৃদয়পুর স্টেশনে ট্রেনের তলা থেকে মিলেছে বোমা। হ্যালা বটতলাতে কৌটো বোমা উদ্ধার হয়েছে। সবমিলিয়ে বারাসতেই তিন জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে বোমা। আজ গঙ্গা সাগর থেকে ফিরছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুর থেকে বারাসত, কাঁচরাপাড়া থেকে আগরপাড়া সবজায়াগায় জোর করে বনধ সফল করার জন্য বামেদের এই বাড়াবাড়ি থেকে দৃশ্যতই বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) বললেন। বনধের নামে গুন্ডাগিরি করছে সিপিএম।
তিনি বলেন, “ট্রেনের নিচে বোমা রেখে, বাইক পুড়িয়ে, বাস ভেঙে গুন্ডাগিরি। বনধের নামে গুন্ডাগিরি করতে দেওয়া হয়নি, হবেনা। আমি সিপিএমের মতো গুলিপন্থায় বিশ্বাস করি না। মারপিট পন্থায় বিশ্বাস করি না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন। রাস্তায় নামুন। প্রতিবাদের অনেক ভাষা আছে। কোথাও গাড়ি জ্বালিয়েছে, কোথাও ট্রেনের নিচে বোমা রেখেছে। বাংলায় এসব বরদাস্ত করা হবে না। বছরে চারবার করে বন্ধ ডাকে সিপিএম। এই করতে করতে দলটা রাজ্যে সাইন বোর্ড হয়ে গিয়েছে। এর চেয়ে কেরলের সিপিএম অনেক ভাল। দেশের অর্থনীতির কথা ভাবতে হবে। বনধের কারণে একজন দোকানদারের যেমন ক্ষতি হয়। তেমনই কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এই বনধের ফলে কত ক্ষতি হচ্ছে।” আরও পড়ুন-Bharat Bandh: রাত পোহালেই ২৪ ঘণ্টার ভারত বনধ, পরিবহন থেকে ব্যাংক স্তব্ধ হতে পারে সবকিছু
আগেই জানানো হয়েছে যে ধর্মঘটের ইস্যুগুলিকে সমর্থন করেছেন মমতা। তবে এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ধর্মঘট করতে দেবেন না। দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, মমতার ভরসায় সিপিএম বনধ করতে নেমেছে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বনধকে সমর্থন করি না। যে কারণে বনধ ডাকা হয়েছে, সেনিয়ে সবার আগে আন্দোলনে নেমেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। চিরকালই বনধের রাজনীতিকে সমর্থন করে না শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে ধর্মঘট ব্যর্থ করতে কেন্দ্র এবং রাজ্য ‘সরকারি মেশিনারি’কে কাজে লাগালে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে বামেরা। ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। জনজীবন স্বাভাবিক রাখায় পরিবহন দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত সরকারি বাসও চালানো হচ্ছে। ফেরি পরিষেবাও যাতে স্বাভাবিক থাকে তা-ও নিশ্চিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বেসরকারি বাস, মিনিবাস থেকে শুরু করে ট্যাক্সি এবং ক্যাব পরিষেবাও সচল রাখতে বৈঠক করেছেন পরিবহন কর্তারা। আগামী কাল সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।