কলকাতা, ৭ জানুয়ারি: দেশে চাকরি নেই, মন্দায় অর্থনীতি, (Economic Slowdown) সর্বত্র চলছে ছাঁটাই, ব্যাংক দেউলিয়া, এলআইসি পলিসি বন্ধ করে দিচ্ছে, সেই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (NRC), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) (NRC) ও জনগণনার (এনপিআর) (NPR) বিরোধিতায় আগামী কাল বুধবার দেশ জুড়ে ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের (Bharat Bandh) ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নগ। একই দিনে গ্রামীণ ভারত ধর্মঘট ডেকেছে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলি। সিপিএম, কংগ্রেস-সহ ২০টি দল এ রাজ্যে ওই ধর্মঘটকে সমর্থন করছে। ধর্মঘটের ইস্যুগুলিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি সমর্থন করলেও, ধর্মঘট কোনও মতেই সমর্থন যোগ্য নয় বলে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। মমতার এই অবস্থানকে ‘দ্বিচারিতা’ হিসেবেই দেখছে সিপিএম। একই সুর বিজেপির গলাতেও।
ধর্মঘটের ইস্যুগুলিকে সমর্থন করেছেন মমতা। তবে এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ধর্মঘট করতে দেবেন না। দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, মমতার ভরসায় সিপিএম বনধ করতে নেমেছে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বনধকে সমর্থন করি না। যে কারণে বনধ ডাকা হয়েছে, সেনিয়ে সবার আগে আন্দোলনে নেমেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। চিরকালই বনধের রাজনীতিকে সমর্থন করে না শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে ধর্মঘট ব্যর্থ করতে কেন্দ্র এবং রাজ্য ‘সরকারি মেশিনারি’কে কাজে লাগালে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে বামেরা। ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। জনজীবন স্বাভাবিক রাখায় পরিবহন দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত সরকারি বাসও চালানো হচ্ছে। ফেরি পরিষেবাও যাতে স্বাভাবিক থাকে তা-ও নিশ্চিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বেসরকারি বাস, মিনিবাস থেকে শুরু করে ট্যাক্সি এবং ক্যাব পরিষেবাও সচল রাখতে বৈঠক করেছেন পরিবহন কর্তারা। আগামী কাল সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আরও পড়ুন-Bharat Bandh: বুধবারের ভারত বনধে রয়েছে ব্যাংক কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন, তাই লেনদেনও ক্ষতির মুখে
ভারত বনধে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে আগেই মন্ত্রকের তরফে নোটিস জারি হয়। তাতে বলা ছিল, ধর্মঘটের দিন কোনও রকমের ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হবে না। সব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে এই নির্দেশ লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় রেলওয়ে অ্যাক্ট ১৯৮৯-এর ১৭৩, ১৭৪, ১৭৫ ধারায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাইকোর্ট এ দিন একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় রাজ্য সরকারকে ধর্মঘটের দিন আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিতে নজর রাখতে বলেছে। অন্যদিকে সিপিএম নেতারা বলছেন আগামী কালকের বাজার আজই সেরে ফেলতে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সবকিছু অচল হতে চলেছে।