বড়দিনে কলকাতার ঠিকানা পার্কস্ট্রিট (Photo Credits: Wikimedia Commons)

কলকাতা, ২৫ ডিসেম্বর: নিয়ম মেনে ঐতিহ্যময়। সকালে যে শহর ছড়িয়ে ছিল ভিক্টোরিয়া-ময়দান-চিড়িয়াখানা-নিক্কো পার্ক-নন্দন-মোহর কুঞ্জ থেকে নামি মলে। শীতের (Winter) সন্ধ্যে ঢলতে না ঢলতেই সেই শহরটার ঠিকানা যেন একমাত্র মধ্য কলকাতার চেনা চৌহদ্দি- পার্ক স্ট্রিট (Park Street)। অল্প অল্প করে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে যত ঘন হয়ে রাত নামছে ততই বাড়ছে মানুষের উৎসাহ। তত থক থকে হচ্ছে ভিড়। তিল ধারণের জায়গা নেই চেনা রাস্তায়। বড়দিনের সন্ধ্যেতে কলকাতার চেনা মৌতান 'পার্ক স্ট্রিটে'ই।

সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালে প্রতি বছরের মতোই এবারো সাজানো হয়েছে বড়দিনের ট্যাবলো। যেখানে যিশু খ্রিস্টের জন্মলগ্নের কাহিনি সাজিয়ে তোলা হয়েছে। একদিকে যেমন শান্ত-সমাহিত সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, অন্যদিকে তেমনই কলরবে উচ্ছল পার্ক স্ট্রিট। ক্রিসমাস কার্নিভালে উৎসাহী জনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাজির ভারী পুলিশ বাহিনী। ভিড় সামলাতে পথে নেমেছে কলকাতা পুলিশের সদ্য গঠিত সশস্ত্র নারীবাহিনী 'ওয়ারিয়রর্স।' তবে শুধু পার্ক স্ট্রিট নয়, কলকাতার সর্বত্রই মানুষের ঢল উৎসবের সবটুকু স্বাদ চেটেপুটে নিতে। লোকাল ট্রেন থেকে মেট্রো কোথাও তিলধারণের জায়গা নেই। গত কয়েকদিন ধরেই আলোয় আলোয় রাজ্যবাসীকে (West Bengal) আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল পার্কস্ট্রিট। আজ সেখানে শুধু জনারণ্য। একবার মিশে গেলে আর চিনতে পারবেন না নিজেকে। বরদান মার্কেট থেকে শুরু করে এপিজে স্কুল। গোটা চত্বরটাই কাতারে কাতারে মানুষ। ফুটপাথে সারিবদ্ধ দোকান। ক্রিসমাস ট্রি (Christmas Tree), কসমোপলিটন কলকাতা যেন কলোনিয়াল কলকাতাকে টেক্কা দিতে ব্যস্ত। আরও পড়ুন: Christmas In Kolkata: বড়দিনের মৌতাতে কসমোপলিটন কলকাতা, প্রিয় শহরের জনারণ্যে হেঁটে বেড়ায় সান্তা বুড়ো

সকালের ছবিটা ছিল একেবারে অন্য। ছরিয়ে ছিল হেথায় হোথায় নিজের পছন্দের জায়গায়। সারাদিন টো টো করে ঘুরে একটা দল গোল হয়ে বসে ময়দানে (Maidan) সালোয়ার থেকে চোরকাঁটা ফেলছে। আর একটা দল মন দিয়ে কমলালেবুর (Orange) খোসা ছাড়াচ্ছে। ময়দানকে মাঝ বরাবর চিড়ে যাওয়া কংক্রিকেট রাস্তার দুপাশে চেয়ার রয়েছে। সেখানে গা এলিয়ে গল্পে মশগুল প্রেমিক প্রেমিকা। সামনে থেকে মশলামুড়ি হেঁকে যাচ্ছে ফেরিওয়ালা। সেন্টপলস ক্যাথিড্রালের একনিষ্ঠ বাসিন্দা পায়রার দল আজ কেমন যেন শঙ্কিত। এত লোক কোথায় ছিল? সারা বছর যখন নিরুপদ্রবে প্রহর কেটে যায়, আর আজ যীশুপুজোর সমাগমে দিবানিশি যেন চঞ্চলা।