এই দুনিয়ার প্রতিটি মানুষ একবার হলেও আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার পরিকল্পনা করে। আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার মানে যদি আয়ের জায়গা মজবুত করা হয় তাহলে কি ভিক্ষাটাও আয়ের মাধ্যম? নাকি নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করে তার পরিবর্তে টাকা পাওয়ার নাম আয় বা আর্থিকভাবে স্বাধীন? মনে করুন যদি এমন হয় আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী আপনাকে কোনও কোম্পানি কাজ দিয়েছে, কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও আপনার যোগ্যতার কোনও উন্নতি হয়নি, কারণ আপনি প্রতিদিন অফিস তো যান, কিন্তু আপনাকে দিয়ে কোনও কাজ করানো হয় না, শুধু মাসের পর মাস আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে মোটা অংকের বেতন। এমনই ঘটেছে ফ্রান্সের বাসিন্দা লরেন্স ভ্যান ওয়াসেনহোভ নামের এক মহিলার সঙ্গে।
লরেন্স ভ্যান ওয়াসেনহোভের কথা অনুযায়ী বছরের পর বছর ধরে প্রতিদিন অফিসে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু কোম্পানি কোনও কাজ না করিয়েও প্রতি মাসে বেতন দিচ্ছে তাকে। এটি এক-দুই বছরের গল্প নয়, গত ২০ বছর ধরে এমনই চলছে। অবশেষে বিরক্ত হয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। লরেন্সের দাবি অনুযায়ী তিনি একটি সরকারি চাকরি করেন এবং ১৯৯৩ সালে ফ্রান্স টেলিকমে নিয়োগ করা হয় তাকে। মহিলাটি মৃগী রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার অবস্থার কথা জানার পরই চাকরি দেওয়া হয় তাকে। ২০০২ সাল পর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিল, কিন্তু অন্য অফিসে বদলি হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। তবে গত ২০ বছর ধরে সময়মতো বেতন পাচ্ছেন তিনি।
কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করার আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের মতামত জানানোর চেষ্টা করেছিলেন লরেন্স, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কোনও রাস্তা খুঁজে না পেয়ে অবশেষে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। লরেন্সের আইনজীবী বলছেন, কোম্পানিটি তাকে কাজ না করিয়েও তাকে প্রতি মাসে বেতন দিচ্ছে। লরেন্সের দাবি, এই ভাবে বিনা কাজে বেতন দিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে তাকে। কোম্পানির বিরুদ্ধে 'কর্মক্ষেত্রে নৈতিক হয়রানি ও বৈষম্যের' অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন লরেন্স। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি বলেছে যে তারা মহিলাদের জন্য খুব ভালো কাজের পরিবেশ দিয়ে থাকে।