পঞ্জিকা মতে আশ্বিন মাসের চতুর্দশী তিথিতে কালীপূজা (Kali Puja) অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর আগের রাতটিকে বলা হয় 'ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi)।' বলা হয় এই দিন মৃত পূর্ব-পুরুষরা মর্ত্যে নেমে আসেন৷ তাঁদের খুশি করতে ও অতৃপ্ত আত্মাদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে নানান আচার পালন করতে হয়। চৌদ্দ প্রদীপ (14 Lamp) জ্বালিয়ে চৌদ্দ পুরুষের আত্মাকে তুষ্ট করে অশুভ শক্তিকে দূর করার প্রথা পালন করা হয় বলেও এই দিনটাকে 'ভূত চতুর্দশী' বলে। এছাড়া এই দিন ১৪ রকমের শাক (14 Shak) খাওয়ারও নিয়ম পালন করতে হয়। কালী পুজো সমাগত। আগামী শনিবার 'ভূত চতুর্দশী।' চলুন জেনে নেওয়া নেওয়া যাক কেন খাওয়া হয় এই ১৪ শাক?
শাস্ত্রমতে, উপরোক্ত নিয়ম পালন করার নিয়ম থাকলেও, তবে বিজ্ঞান বলছে একসঙ্গে অনেকগুলি প্রদীপ জ্বালিয়ে ক্ষতিকারক কীটের (Insect) হাত থেকে হৈমন্তিক ফসল রক্ষা করতেই কৃষিজীবী বঙ্গবাসী (West Bengal) ১৪ শাকের উপাচার পালন করে থাকেন। ভেষজ বিজ্ঞানীদের মতে, এই মরশুম ঋতু পরিবর্তনের মরশুম। তাই এই সময়ে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসাবে এই শাকগুলি খাওয়া হয়ে থাকে। বাংলার ঋতুর প্রকোপ অন্য প্রদেশের থেকে অনেক বেশি হওয়ায় আশ্বিন ও কার্ত্তিক এই দুটি মাসকে 'যমদংস্টা' কাল বলা হয়ে থাকে। যে সময় এই শাকগুলি খেলে রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ মতে প্রাচীন বাংলায় এই চোদ্দো শাকগুলি ছিল- সুষণি শাক, সরষে শাক, হিঞ্চে শাক,ওল, কেও, বেতো, কালকাসুন্দা, নিম, সরিষা, শালিঞ্চা বা শাঞ্চে, জয়ন্তী, গুলঞ্চ, পটুক পত্র বা পলতা, ভন্টাকি (ঘেঁটু) বা ভাঁট, এবং শেলু বা শুলকা। বাংলার নব্য স্মৃতিশাস্ত্রকার রঘুনন্দনের অষ্টবিংশতি তত্ত্বের “কৃত্যতত্ত্বে” এই সময়কালকে উল্লেখ করে “নিৰ্ণয়া-মৃতের” অনুযায়ী বলা হয়েছে-
"ওলং কেমুকবাস্তূকং, সার্ষপং নিম্বং জয়াং।
শালিঞ্চীং হিলমোচিকাঞ্চ পটুকং শেলুকং গুড়ূচীন্তথা।
ভণ্টাকীং সুনিষন্নকং শিবদিনে খাদন্তি যে মানবাঃ,
প্রেতত্বং ন চ যান্তি কার্ত্তিকদিনে কৃষ্ণে চ ভূতে তিথৌ।"
আরও পড়ুন: Kali Puja 2019: দেবী পান করেন না; তবুও পুজোর নৈবেদ্যে কেন রাখা হয় মদ, জানেন?
এই ১৪ শাকের রোগ প্রতিষেধক ক্ষমতা সম্পর্কে জেনে নিন-
ওল- অর্শ, রক্ত আমাশা, বাত, চর্মরোগ, গ্যাস-অম্বল নাশক।
কেও- কৃমিনাশক, হজমকারক, ক্ষুধাবর্ধক।
বেতো- কশ মিলল ওমরের, গোটা ঘটনা শুনলে শিউরে উঠবেন!