পূজা মণ্ডল, ১৪ ফেব্রুয়ারি: করোনা আতঙ্কে (Coronavirus) কাঁপছে বিশ্ব। কাঁপছে চিন (China)। চিনা ভাইরাসের আতঙ্ক গ্রাস করেছে মহানগরকেও। যেহেতু শোনা যাচ্ছে করোনার উৎস বিভিন্ন প্রাণী। তাই ভয়ে আমিষ খাদ্য বিশেষ করে মুরগী, খাসির মতন পদগুলি পাত থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন আপাতত কলকাতার বাসিন্দারা। যার প্রমাণ মিলেছে কলকাতার ট্যাংরার বিখ্যাত চায়না টাউনেও। করোনা আতঙ্কে ফাঁকা চায়না টাউন। ফলে হাজার হাজার টাকার ব্যবসা খুইয়ে মাছি তাড়াচ্ছেন এখানকার চিনে রেস্তোরাঁর মালিকেরা।
চিনের উহান থেকে কলকাতার ট্যাংরার দূরত্ব প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার। তবু করোনাভাইরাসের আতঙ্ক গ্রাস করেছে চায়না টাউনকে। কলকাতার মধ্যে এই ছোট্ট চিন শনি-রবিবার সাধারণত গমগম করে খাদ্যরসিকদের ভিড়ে। চিনে খাবারের স্বাদ পেতে এখানে ভিড় করেন বহু মানুষ। কিন্তু করোনাভাইরাসের আতঙ্কে চিনেপাড়া-মুখো হচ্ছেন না এখন প্রায় কেউই। করোনাভাইরাসে চিনের ইতোমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১৩০০-ও বেশি মানুষের। আর তারই প্রভাব পড়েছে চায়না টাউনের ছোট-বড় প্রায় ৪০টি রেস্তোরাঁয়। বিগ বস, কিম লিং-এর মতো চায়না টাউনের বড় রেস্তোরাঁ হোক বা শান লি-র মতো ছোট রেস্তোরাঁ - সবারই অবস্থা বেশ খারাপ। ছোট রেস্তোরাঁগুলিতে দিনে ১৭,০০০ টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। আর বড় রেস্তোরাঁগুলিতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় চার লক্ষ টাকা। আগে যেখানে শনি-রবিবার খরিদ্দারদের লম্বা লাইন দেখা যেত, সেখানে এখন প্রায় ফাঁকাই থাকছে বেশিরভাগ টেবিল। এখানে রান্নার উপকরণ সবই স্থানীয় বলে জানাচ্ছেন শ্যেফরা। তবু আতঙ্ক পিছু ছাড়ে না। কলকাতার পাটুলির অন্যতম চায়না রেস্তরাঁ 'ইউয়ান'-এর কর্ণধার অঞ্জনা দত্ত অবশ্য লেটেস্টলি বাংলাকে জানালেন অন্য কথা। অঞ্জনার কথায়, করোনার কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেনি তাঁর চিনা ডেরায়। মানুষ আগের মতই আসছেন। স্বাদ নিচ্ছেন চিকেন থেকে মাটন, ল্যাম্ব, পর্কের। আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষেও দারুণ ভিড় হয়েছে তাঁর রেস্তোরাঁয়। আরও পড়ুন: East-West Metro: চোখের জল ফেলতে হয়েছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের টাকা জোগাড় করতে: মমতা ব্যানার্জি
দেশের বৃহত্তম চায়না টাউন এটিই। এখানে বসবাস করেন প্রায় ২৫০০ ইন্দো-চিনা। কলকাতার আরও একটি চিনে পাড়া টেরিটি বাজারে এই সংখ্যাটা ২০০০। এখানে একজনের শরীরেও করোনাভাইরাসের কোনও সংক্রমণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। চিনের সঙ্গে যোগাযোগই নেই এখানকার বেশিরভাগ বাসিন্দার। তবু চায়না টাউনে রেস্তোরাঁগুলি প্রায় ফাঁকাই থাকছে।