প্রতি বছর ইসলামি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৫ তারিখে পালিত হয় শব-ই-বরাত (Shab-E-Barat )। শব-ই-বরাত আসলে দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত শব এবং বরাত। শব শব্দের অর্থ রাত এবং বরাত শব্দের অর্থ খালাস। এই রাতে, মুসলিম সমাজ তাদের কাছের মানুষদের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে। মান্যতা আছে যে এই রাতে আল্লাহর উপর সত্যিকারের বিশ্বাস করে প্রার্থনা করলে সমস্ত প্রার্থনা পূরণ হয়। এবার জেনে নেওয়া যাক শব-ই-বরাত কখন এবং এর গুরুত্ব কি।
ইসলাম ধর্ম অনুসারে ইসলামি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ সূর্যাস্তের পর পালন করা হয় শব-ই-বরাত। রজব মাসের পর ইসলামি ক্যালেন্ডারের অষ্টম মাস হল শাবান মাস। এই মাস শুরু হবে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১২ ফেব্রুয়ারি। শব-ই-বরাত শাবান মাসের ১৪-১৫ তারিখে পালিত হয়, যা ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবারে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই রাতে চাঁদ দেখা গেলেই এই দিনকে শব-ই-বরাতের রাত মেনে নেওয়া হবে।
শব-ই-বরাতের ইতিহাস জানা যায় শিয়া মুসলমানের দ্বাদশ ইমাম মুহাম্মদ আল-মাহদির জন্ম থেকে, কারণ শিয়া মুসলমানরা যখন মুহাম্মদ-আল-মাহদির জন্মদিনের আনন্দে মেতে ছিলেন, সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলমানরা বিশ্বাস করেন সেই সময় আল্লাহ নূহের জাহাজকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। এই দুই কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই শব-ই-বরাত উৎসব পালন করেন।
মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য, শব-ই-বরাত কেবল প্রার্থনার রাতই নয়, আল্লাহর আশীর্বাদ পাওয়ার রাতও। এই রাতে মুসলমানরা তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য ফাতিহা পাঠ করেন। পুরুষরা যখন মসজিদে নামাজ পড়েন, তখন মহিলারা বাড়িতে নামাজ পড়েন। মুসলমানদের মধ্যে মান্যতা রয়েছে, শব-ই-বরাতের রাতে আল্লাহ পৃথিবীতে আসেন এবং তার ভক্তদের সমস্ত ক্ষমা করে তাদের জন্য স্বর্গের দরজা খুলে দেন।
শব-ই-বরাতের রাতকে মাগফিরাতও (ক্ষমা প্রার্থনা) বলা হয়। এই রাতে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সকলেই তাদের সব ভুল ও অপরাধের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ইসলাম ধর্মে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য মোট পাঁচটি রাত নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হল শব-ই-বরাত, এছাড়া শুক্রবারের রাত, ঈদুল ফিতর (Eid-ul-Fitr), ঈদুল আযহার (Eid-ul-Azhar) এবং রজবের রাত। মান্যতা আছে যে এই পাঁচটি রাত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে আল্লাহ ক্ষমা দান করেন।