Devi Skondomata Photo Credit: Twitter@gharshitha_

আজ মহা পঞ্চমী , শাস্ত্র মতে দেবীর বোধন। ১৪ অক্টোবর, শনিবারর মহালয়ার পর প্রতিপদ তিথি থেকেই শুরু হয়েছে শারদীয়া নবরাত্রি। আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে নবরাত্রির পঞ্চম রাত। মহাপঞ্চমীর তিথিতে দেবী স্কন্দমাতাস্বরূপে পূজিতা হন।

"স্কন্দ" অর্থে কার্তিকেয়। স্কন্দের মাতা অর্থে কার্তিকেয়র মা, দেবী দুর্গা। জগদম্বা তাঁর এই স্কন্দমাতা স্বরূপে দেবসেনাপতি কার্তিকেয়র জননী। দেবীর প্রতিমাতেও সেই বাৎসল্যরসের পরিপূর্ণতার প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। মা বসেছেন সিংহপৃষ্ঠে, মায়ের কোলে বসেছেন বালক স্কন্দ বা শিশু কার্ত্তিক। মা যেমন সন্তানকে কোলে করে আগলে রাখেন, দেবী দুর্গাও তদ্রূপ স্কন্দকে নিজ অঙ্কে আগলে রেখেছেন। মহামায়া সর্বভাবের ঊর্ধ্বে থেকেও বাৎসল্যভাবের কাছে নতি স্বীকার করেছেন, এটা তারই প্রমাণ।

নবরাত্রের পঞ্চমদিনে, অর্থাৎ পঞ্চমী তিথিতে শ্রীঅম্বিকা তাঁর স্কন্দমাতাস্বরূপে আবির্ভূতা হন। মায়ের রূপটি অতীব মনোহর। দেবীর তিনটে নেত্র, সর্বাঙ্গে অলংকার, শীল ও সৌন্দর্যের স্কন্দমাতা। সিংহবাহিনী মায়ের চারটে হাত, কিন্তু হাতে নেই কোন অস্ত্র। অস্ত্রের বদলে ওপরের দুই হস্তে রয়েছে পদ্মযুগল, নিচের বামহস্তে অভয় বিতরণ করছেন ও ডান হস্ত দিয়ে শৌর্যবান কার্ত্তিককে ধারণ করে আছেন। আগেই বলেছি, মায়ের এই রূপটি মমতা ও সন্তানবাৎসল্যে ভরপুর, তাই হাতে অস্ত্রশস্ত্র না থাকাটাই স্বাভাবিক।

দেবী কখনো কখনো পদ্মাসনাও হন। কোন কোন শাস্ত্রে দেবীকে "অগ্নিরূপিণী" বা অগ্নির অধিষ্ঠাত্রী দেবতারূপেও উল্লেখ করা হয়েছে। কথিত আছে, দেবী প্রখর সূর্যমণ্ডলের অন্দরে বাস করেন।

পুরাণ অনুযায়ী ব্রহ্মা থেকে সৃষ্ট চার ঋষিকুমার- সনক,সনন্দন,সনাতন ও সনৎ জন্মলাভ করেই পরমতত্ত্বে মনোনিবেশ করেন। পিতা ব্রহ্মার মুখ হতেই তাঁরা ভগবতী আদ্যাশক্তির অপ্রাকৃত লীলাবিলাস সম্বন্ধে জ্ঞাত হন। ব্রহ্মময়ী মায়ের মহিমা শ্রবণ করে সর্বকনিষ্ঠ ঋষিবালক সনৎকুমারের বাসনা জাগে বিশ্বমাতার সন্তান হয়ে মাতৃস্নেহসুধা পান করার। নিষ্কলুষ সনৎকুমারের এই ইচ্ছা পূরণ করতেই কল্পতরু মহামায়া জ্যোতির্ময়ীমূর্তিতে প্রকট হয়ে সনৎকুমারকে কোলে তুলে নিয়ে সিংহে বসেছিলেন। সনৎকুমারের অপর নাম ছিল স্কন্দ, তাই তাঁকে অঙ্কে ধারণ করে মা হলেন স্কন্দমাতৃস্বরূপিণী।

দেবী স্কন্দমাতার স্তোত্রঃ-

সিংহাসনগতা নিত্যং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া।

শুভদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী।।