সদগুরু (Photo Credits: Isha Foundation)

নতুন দিল্লি, ৩১ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী (PM) বললেন, নয়া নাগরিকত্ব আইন (CAA) বুঝতে সদ্‌গুরুর ব্যাখ্যা শুনুন। আর সদ্‌গুরু বললেন, ‘‘আমি নয়া নাগরিকত্ব আইন পুরোটা পড়িনি!’’ এতদিন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা বিরোধী শিবির এবং বিক্ষোভে সামিল গোটা দেশের ছাত্রছাত্রীদের ‘উপদেশ’ দিচ্ছিলেন, নয়া নাগরিকত্ব আইন পড়ে দেখুন। যুক্তি ছিল, ছাত্রছাত্রীদের ভুল বোঝানো হয়েছে। তারা আইনে কী রয়েছে, না পড়েই রাস্তায় নেমে পড়েছে! প্রধানমন্ত্রীও এই প্রচারে নেমে মঙ্গলবার ‘আধ্যাত্মিক গুরু’ সদ্‌গুরু জগ্গী বাসুদেবের একটি ভিডিও টুইট করেছেন। লিখেছেন, ‘‘সদ্‌গুরু সিএএ জলের মতো ব্যাখ্যা করেছেন, তা শুনে দেখুন।’’ অথচ প্রধানমন্ত্রীর প্রচারিত ভিডিওয় সদ্‌গুরু ২০ মিনিটের বেশি সিএএ-র গুণাগুণ ব্যাখ্যা করলেও প্রথমেই বলছেন, ‘‘আমি পুরো আইন পড়িনি। সংবাদপত্র পড়েছি, যা লেখালেখি হচ্ছে, সেগুলো পড়েছি।’’ যা নিয়েই ছড়িয়েছে নয়া বিতর্ক।

বিরোধীদের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যে কতটা মরিয়া, তা বোঝা যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করছিলেন বলে নোট বাতিলের গুণাগুণ ব্যাখ্যা করতে তিনি বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নামিয়েছিলেন। এবার তাঁরাও নারাজ। আবার তিনি নিজেও আইন বোঝাতে পারছেন না। তাই আধ্যাত্মিক গুরুকে দিয়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন বোঝাচ্ছেন। আর সেই গুরু সিএএ না পড়েই তিনি বলেছেন, ‘‘এই আইন সব দেশেই রয়েছে। এই আইনের প্রয়োজন রয়েছে।’’ আবার ছাত্রছাত্রীদের আইন না পড়েই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য তিরস্কার করতেও ছাড়েননি। পড়ুয়াদের পাথরের খনির শ্রমিকের (Labour) সঙ্গে তুলনা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সবাই বলছে, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা তো পাথরের খনির শ্রমিকের মতো আচরণ করছে। সবাইকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, এতটা প্রতিক্রিয়া হবে বলে সরকারের ধারণা ছিল না, তাই বেশি পুলিশ নামায়নি। ফলে পুলিশই মার খেয়েছে! আরও পড়ুন: New Residence For Narendra Modi: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে আগুন না লাগলেও, বন্দোবস্ত হচ্ছে নতুন ঠিকানার

প্রধানমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করতে নেমে সদ্‌গুরুর যুক্তি, পুলিশ (Police) ‘সংযম’ দেখিয়েছে। গোলাগুলি ব্যবহার করেনি। না হলে আরও অনেক বেশি সংখ্যায় মৃত্যু হত। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, পুলিশের লাঠি চালানোকে কার্যত সমর্থন করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘একজন পাথর ছুড়েছে, অন্যজন ছোড়েনি। পুলিশের হাতে ভিড়ের মধ্যে দু’জনেই মার খাবে।’’ শুধু জগ্গী বাসুদেবের (Sadhguru Jaggi Vasudev) ভি়ডিও টুইট করাই নয়, নিজের একটি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে ‘#ইন্ডিয়াসাপোর্টসিএএ’ সমর্থনের আর্জি জানিয়ে মোদি লিখেছেন, ‘‘এই আইন সমর্থন করুন, কারণ এটা অত্যাচারিত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়।’’ নমো অ্যাপ থেকে ‘#ইন্ডিয়াসাপোর্টসিএএ’ টুইটারে প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। বিজেপি ‘জনজাগরণ অভিযান’-এ নামছে। এর আগে অযোধ্যার রামমন্দির নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের উপর ভরসা করেছিল বিজেপি-আরএসএস। নোট বাতিলের সমর্থনেও দাঁড়িয়েছিলেন রামদেব, সদ্‌গুরুরা।