কুচ, ১০ আগস্ট: বিশ্বের ধনীতম গ্রামটি কিন্তু রয়েছে ভারতেই৷ আর এনিয়ে কোনও তর্ক চলবে না৷ যে গ্রামের মোট জনসংখ্যা কোনও বড় শহরের জনসংখ্যার অর্ধেক৷ প্রায় ৭ হাজার ৬০০টি বাড়ি রয়েছে গ্রামটিতে৷ রয়েছে ১৭-টিরও বেশি ব্যাংক৷ যেখানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫ কোটি টাকা৷ জলাধার, জঙ্গল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মন্দির, আর্ট গো-শালা, লেক, কলেজ, স্কুল, গ্রামে রয়েছে সবই৷ গ্রামের বাসিন্দাদের জনপ্রতি ১৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা আছে৷ ভারতের বাকি গ্রামগুলির থেকে একেবারে ভিন্ন চরিত্রের এই গ্রামের অবস্থানে গুজরাটের কুচ জেলায়৷ এই কুচ হল একটি রহস্যে মোড়া জেলা৷ এখানকার ১৮টি গ্রামের উৎপত্তি আজও রহস্যই রয়ে গেছে৷ তারই একটি গ্রাম হল মাধাপার৷ আর সেই মাধাপারই বিশ্বের ধনীতম গ্রাম৷ আরও পড়ুন-Mamata Banerjee: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীরা, এসএসকেএমে বললেন মমতা
বলাবাহুল্য মাধাপারের এমন প্রতিপত্তির নেপথ্যে রয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের কৃতিত্ব৷ গ্রামের বাসিন্দাদের আত্মীয় পরিজনদের অনেকেই প্রবাসী৷ আমেরিকা, ইংল্যান্ড, আফ্রিকা, দুবাই, সৌদি আরব, কাতার, বাহরিন মিলিয়ে মাধাপারগ্রামের প্রায় ৬৫ শতাংশ বাসিন্দা প্রবাসী৷ মূলত কর্মসূত্রে প্রবাসী হলেও পরিবারের জন্য প্রতি মাসেই বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা তাঁরা গ্রামে পাঠান৷ যার জেরেই গ্রামের আর্থিক সম্পদ বেড়েছে৷ সার্বিক উন্নয়নও ঘটেছে৷ প্রবাসীদের বেশিরভাগই প্যাটেল৷ একটা সময় পর বিদেশে ভাগ্যাণ্বেষণে যাওয়া বাসিন্দারা দেশে ফিরে এসে গ্রামে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করেন৷
তথ্য বলছে প্রবাসীদের মধ্যে সংযোগ রাখার জন্য ১৯৬৮ সালে লন্ডনে তৈরি হয় মাধাপার ভিলেজ অ্যাসোসিয়েশন৷ এই সংগঠনের লক্ষ্যই ছিল মাধাপারের যেসব বাসিন্দা বিদেশে থাকেন তাঁরা যেন প্রয়োজনে একত্র হতে পারেন৷ গোটা প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে গ্রামেও একই সংগঠন তৈরি করা হয়৷ বিদেশে বসবাস করলেও নিজেদের শিকড়কে ভুলে যাননি প্রবাসীরা৷ তাই কর্মস্থলে কোনও ব্যাংকে টাকা না জমিয়ে অর্জিত অর্থ রাখার জন্য সেই গ্রামের ব্যাংকেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা৷ উন্নয়নের জোয়াড় এলেও এখানকার মানুষের প্রধান জীবিকা চাষবাস৷ মাধাপার উৎপন্ন ফসল নিয়মিত রপ্তানি হয় মুম্বইতে৷