নতুন দিল্লি, ২রা অক্টোবর: আজ ১১৫তম জন্ম বার্ষিকী (115th Birth Anniversary) 'জয় জওয়ান, জয় কিসান' (Jai Jawan Jai Kisan) স্লোগানের (Slogan) প্রণেতা দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (lal Bahadur shastri)। তাঁর জন্মবার্ষিকীতে সারা দেশ আজ তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। একজন নেহেরুভিয়ান সমাজতান্ত্রিক, আজীবন কংগ্রেস সদস্য শাস্ত্রী। চিরজীবন ভারতের কৃষক এবং সৈন্যদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ১৯০৪ সালের ২ রা অক্টোবর তদনীন্তন সংযুক্ত আগ্রা ও ওউধ প্রদেশের বারাণসী অঞ্চলের রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলে। যা বর্তমানে উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) হিসাবে পরিচিত। পরলোক গমন করেন ১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি। চলুন আজ তাঁর ১১৫তম জন্মবার্ষিকীতে জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের ১০ অজানা রহস্য।
- শাস্ত্রীর যখন মাত্র এক বছর বয়স, তখন তিনি তাঁর মায়ের সাথে মুঘলসরাইয়ের (Mughalsarai) মামাবাড়িতে চলে আসেন। কারণ তাঁর বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আরও পড়ুন- Gandhi Jayanti 2019: মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে আজ প্রকাশ্য শৌচমুক্ত দেশের ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
- কাশী বিদ্যাপীঠ (kashi Vidyapith) থেকে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতক পাশ করেন ১৯২৬ সালে। তখনই তিনি শাস্ত্রী (পণ্ডিত) উপাধিতে ভূষিত হন। এই শিরোনাম তাঁকে কাশী বিদ্যাপীঠ থেকেই দেওয়া হয়েছিল।
- মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi) যখন অসহযোগ আন্দোলনে যোগদানের জন্য দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছিলেন, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর। গান্ধীজির আহ্বানে সাড়া দিয়ে লেখাপড়া ছেড়ে তিনি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
- ১৯২০ সালে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। গভীরভাবে প্রভাবিত হয়ে তিনি প্রথমে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গান্ধীজী) ও পরে জওহরলাল নেহরুর (Jauharlal Nehru) একজন বিশ্বস্ত অনুগামী হয়ে ওঠেন।
- ১৯২৭ সালে মির্জাপুরের মেয়ে ললিতা দেবীর (Lalita Devi) সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন (marriage)। যাবতীয় সামাজিক প্রথা ও রীতিনীতি মেনেই বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বরপণ হিসেবে তাঁকে দেওয়া হয় একটি চরকা ও তাঁতে বোনা কাপড়। কারণ, তার থেকে বেশি কিছু গ্রহণ করতে লাল বাহাদুর অসম্মত হন।
- ১৯৩০ সালেলবণ আইন ভঙ্গ করতে মহাত্মা গান্ধী ডান্ডি অভিযান (Dandi Movement) করেন। সারা দেশ তাঁর এই প্রতীকী প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। কোনরকম পিছুটান না রেখেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ঝাঁপিয়ে পড়েন সেই আন্দোলনে।
- স্বাধীনতার পরবর্তীকালে তিনি রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে হয়ে ওঠেন জওহরলাল নেহরুর অন্যতম প্রধান সঙ্গী। প্রথমে রেলমন্ত্রী (১৯৫১-১৯৫৬) হিসেবে ও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
- জানা যায়, শাস্ত্রীকে নেহেরুর উত্তরসূরী হিসেবে বাছা হয়েছিল। কারণ নেহেরুকন্যা ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) সেই সময় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
- ১৯৬৫ সালের ইন্দো-পাক যুদ্ধে নায়ক ছিলেন শাস্ত্রীই। এই যুদ্ধের সময়ই জনপ্রিয় পায় তাঁর বিখ্যাত স্লোগান "জয় জওয়ান, জয় কিসান।"
- বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত থাকার জন্য দীর্ঘ সাত বছর তাঁকে ব্রিটিশের কারাগারে কাটাতে হয়।
মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক শিক্ষাদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন শাস্ত্রী। “কঠোর পরিশ্রম প্রার্থনারই সমতুল্য” – একথাই মনে করতেন তিনি। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ ও ঐতিহ্য অনুসরণ করেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ভারতীয় সংস্কৃতিতে আজও অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।